আগামী মাসেই চালু হতে যাচ্ছে ফেসবুক টিভি! এটি কোন কোনো লাইভ স্ট্রিমিং নয়, একবারে চিরাচরিত সেই টিভির মতো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান দেখা যাবে এ টিভিতে। ধারনা করা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক ভিডিওকে অগ্রাধিকার দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এখন আলোচনা চলছে কেমন হবে এ ফেসবুক টিভি? ইতিমধ্যে ফেসবুক টিভির জন্য প্রায় ২৪টির বেশি অনুষ্ঠানও তৈরি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
অবশ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই ফেসবুকের টিভি অনুষ্ঠান নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা। গুঞ্জন উঠেছিল আমাজন, হুলু ও নেটফ্লিক্সের মতো গেম কনটেন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখাবে ফেসবুক টিভি! একাধিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, ফেসবুককে ঘিরে তৈরি হওয়া গুঞ্জন সত্যি হতে যাচ্ছে। দুই ধরনের অনুষ্ঠান প্রচারের পরিকল্পনা করছে ফেসবুক। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বড় বাজেটের টিভির মতো মেগা সিরিয়াল, আরেকটি হচ্ছে কম খরচের ৫ থেকে ১০ মিনিটের শো। প্রতিদিন এ শোগুলোর নতুন পর্ব দেখানো হবে। এর মধ্যে কমেডি শো থাকবে। ইতিমধ্যে এ ক্ষেত্রে লোক নিয়োগ দিয়েছে ফেসবুক।

ফেসবুক মূলত দুই ধরনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। চিরাচরিত টিভি অনুষ্ঠানের মতো স্ক্রিপ্টকে কেন্দ্র করে বড় বাজেটের অনুষ্ঠান এবং ছোট বাজেটের কিছু অনুষ্ঠান, যা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা হবে। নেটফ্লিক্স, হুলু ও অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানও এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু তাদের ভাগ্যও হয়েছে অ্যাপল, ভার্টিজন, স্ন্যাপচ্যাট এবং বর্তমান টুইটারে মতো। তারা টিভি খুললেও প্রকৃতপক্ষে মানসম্মত অনুষ্ঠান দিতে পারেনি কেউ।
আর বর্তমানে ফেসবুকের প্রতি মানুষের যে নির্ভরতা, তাতে যদি এর সঙ্গে টিভি যোগ করা হয় তাহলে আমরা আশা করতেই পারি যে ‘গেম অব থ্রোন’ অথবা ‘ওয়াকিং ডেড’-এর পরবর্তী চলচ্চিত্রগুলো চিরাচরিত টিভি কিংবা ইন্টারনেটের সার্ভারগুলোতে নয়, বরং ফেসবুকের টিভিতেই দেখতে পাব। পাশাপাশি ফেসবুকের অন্য সুবিধাদি তো থাকছেই। ফলে ফেসবুকে ঢুঁ মারতে গিয়ে অনুষ্ঠান বা খেলার গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছুটে যাওয়ার আর কোনো আশঙ্কাই নেই।
ফেসবুকের এই ভিডিও উদ্যোগ নেওয়ার অর্থ হচ্ছে ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওগুলোর ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখা। প্রায় ২০০ কোটি ব্যবহারকারীর ওয়েবসাইট হিসেবে আমাজন, ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চায় ফেসবুক। তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করা ও উদ্ভাবনে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে নতুন উদ্যোগের দিকে যাচ্ছে ফেসবুক। এ ছাড়া বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ আয় করার বিষয়টিও বিবেচনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, ম্যাশেবল