সেই ছোটবেলা থেকেই সাইন্স ফিকশনের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে অনেকের। সাইন্স ফিকশন মুভি দেখা নিত্যদিনের রুটিন। নিয়মিত একজন দর্শক হিসাবে বলতেই হয়, হলিউডের বেশিরভাগ মুভিই সাইন্স ফিকশনের নামে জমি টাইপ মুভি ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা থাকে। তবে ২০১৩ সালে হলিউড এই ধারণা থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসতে পেরেছে বলে মনে করি। তাই গত বছরে ভালোলাগা কিছু সাইন্স ফিকশন মুভি নিয়েই আজ লিখতে বসলাম। চলুন দেখে নিন মুভির লিস্টগুলো!
রিডিক
আইএমডিবি রেটিং: ৬.৪/১০
জনপ্রিয় অভিনেতা ভিন ডিজেল অভিনীত হিট সাইন্স ফিকশন মুভি “পিচ ব্ল্যাক” এবং “ক্রনিকেল অফ রিডিকের” লেটেস্ট চেপ্টার বলা চলে। এই মুভিতে ভিন ডিজেল একজন বিপদজনক এন্টিহিরো রিডিক, পলাতক আসামী; যে কিনা গ্যালাক্সির সকল বাউন্টি হান্টারদের লক্ষ। পোড়ামাটির প্রাণহীন পৃথিবীতে তার টিকে থাকা হবে তো!
ওয়ার্ল্ড ওয়ার জেড
আইএমডিবি রেটিং: ৭.১/১০
জেরি লেইন, অবসরপ্রাপ্ত জাতিসংঘ কর্মকর্তা। প্রতিদিনের টুকটাক কাজের পাশাপাশি পরিবারকে সঙ্গ দিয়েই তার সময় পার হচ্ছিল। একদিন হটাত জোম্বি আক্রান্ত হয় নিউইয়র্ক সিটি। শুধু আক্রমণই নয়, তাদের শক্তি ও দক্ষতা এত বেশি যে একত্রে কয়েকটি দেশের পতনও ঘটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাদের হা থেকে রক্ষার উপায় জানা নেই কারো, পৃথিবীকে রক্ষার উৎস বা উপায় খুঁজতে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াতে শুরু করলেন তিনি। জেরি লেইনের নেতৃত্বেই শুরু হল ‘দ্যা ওয়ার্ল্ড ওয়ার জেড’।
সিনেমায় জেরি লেইনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ব্র্যাড পিট, আর এ মুভি দিয়েই অভিনয়ের খাতায় প্রথম নাম লিখলেন ব্র্যাড পিটের ছেলে ম্যাক্স। যদিও আর দশটা মুভির কাহিনীর সাথে খুব একটা পার্থক্য নেই তবুও মুভিটির নির্মাণশৈলীর কারণে বেশ ভাল লেগেছে।
ইলিসিয়াম
আইএমডিবি রেটিং: ৬.৭/১০
সময়টা ২০৫৪ সাল, পৃথিবীর টক্সিসিটি লেভেল এতটাই বেড়ে গেছে যে সেখানে বেঁচে থাকাটা অনেক কঠিন কাজ। পরিবেশ এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে নেই কোন সুন্দর জলাভূমি, আগের মত ফুল ফুটেনা। তাই বিত্তবান লোকেরা পৃথিবী থেকে বহু দূরে মানুষের তৈরি স্পেস স্টেশনে বসবাস করে যেখানে বেশিভাগ মানুষই বসবাস করছে জরাজীর্ণ পৃথিবীতে।
বিভক্ত পৃথিবীতে সমতা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয় একজন স্পেস পারসন, ম্যাট ডেমন। চিরচেনা পৃথিবীতে গিয়ে স্পেস স্টেশনের সাথে সমতা ফিরিয়ে আনতে পারবে তো! এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই দেখেছিলাম মুভিটি।
অবলিভিয়ন
আইএমডিবি রেটিং: ৭.০/১০
২০৭৭ সালের কথা, এলিয়েন আবিষ্কার এবং নিউক্লিয়ার যুদ্ধের পরের গল্প। জয়ী হলেও যুদ্ধ পরবর্তী নানা ঝড় ঝাপটায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাওয়া পৃথিবীতে টিকে যাওয়া কয়েকজনের গল্পও বলা চলে একে। এলিয়েনরা চাঁদ ধ্বংস করে দেয়ার পর মানুষের পরবর্তী গন্তব্য ‘টাইটান’। পৃথিবী থেকে টাইটানে স্থানান্তরের কাজ পরিচালিত হচ্ছে ‘টেট’ নামের সুবিশাল ত্রিকোণাকৃতি মহাকাশযান থেকে।
সব অপারেশন নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত আছে ‘স্যালি’ চরিত্রে ‘মেলিসা লিও’। টাইটানে থাকতে হলে প্রচুর শক্তি প্রয়োজন, এ জন্যেই প্রসেসিং চলছে পৃথিবীর উপরিভাগের সামুদ্রিক পানির। এ কাজ ব্যবহারিক পাওয়ার ষ্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত আছে কিছু ‘ড্রোণ’ আর তাদের দেখভাল করতে আছে কিছু ‘টেকনিশিয়ান’। ‘জ্যাক’ চরিত্রে ‘টম ক্রুজ’ আর ‘ভিকি’ চরিত্রে ‘আন্দ্রে রাইজবোরো’ এমনই দুইজন টেকনিশিয়ান। আর তাদের চলাফেরা আর দৈনন্দিন কার্যক্রমে নানা আতঙ্ক হয়ে আছে রয়ে যাওয়া কিছু এলিয়েন।
পৃথিবীতে জ্যাক আর ভিকির মিশন যখন প্রায় শেষের পথে, ঘটনাক্রমে মুভির কাহিনীতে বিশাল ইমপ্যাক্ট ফেলতে আবির্ভাব হয় এক ক্রাশ ল্যান্ডিং করা মহাকাশযানের একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী ‘জুলিয়া’ চরিত্রে অভিনয় করা ‘ওলগা কুরিলেঙ্কো’। বদলে যেতে বসে অনেক কিছুই। অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ । দেখা মিলে আরও এক রহস্যময় চরিত্র ‘ম্যালকম বিচ’ চরিত্রে ‘মরগ্যান ফ্রি-ম্যান’ এর। তারপর আর কি, একটার পর একটা সাসপেন্সে এগিয়ে চলে মুভির কাহিনী।
আয়রন ম্যান থ্রি
আইএমডিবি রেটিং: ৭.৪/১০
মার্বেল কমিক্স এর কাহিনী অবলম্বনে তৈরি এই মুভিটির প্রথম দুটি পর্ব দেখে থাকলে এটি দেখে মজা পাবেন। প্রতিবারের মতই এর শুরুটা ছিল চমকপ্রদ। প্রতিটি চমক দেখেই মজা পেয়েছি, কারণ প্রথমে একটু চমকিত হলেও পরে মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে। মুভিটির কিছুটা আনপ্রেডিক্টেবলও বটে, এ কাজে পরিচালক কোন কার্পণ্য করেননি।।
অনেকেই টনি স্টার্ককে অলরেডি একজন সুপারহিরো হিসেবে ভাবতে শুরু করেছিলেন তারা মুভিটির এই পর্বে তাকে আবারো টেকনিশিয়ান হিসেবে দেখতে পাবেন।
আপনি কি মনে করেন?
তালিকার কোন কোন মুভি দেখা শেষ? আপনি কি মনে করেন, তালিকায় কোন মুভি টা আসা দরকার? মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার মতামত দিন। 🙂