স্টিভ জবস, নাম শুনলেই ভেসে ওঠে টি-শার্ট, নীল জিন্স আর কেডস পড়া এক ব্যক্তির চেহারা, যিনি পুরো বিশ্বে প্রযুক্তির চেহারাকেই বদলে দিয়েছেন কম্পিউটার, মোবাইল ফোনের ক্রমাগত উন্নয়নের মাধ্যমে। কেবল তাই নয়, সম্পূর্ণ নতুন এক মার্কেটও তৈরি করেছেন তিনি, যাকে এখন বলা হয় ট্যাবলেট কম্পিউটার। আধুনিক কম্পিউটারের জনক হিসেবে চার্লস ব্যাবেজকে স্বীকৃতি দেয়া হলেও ডিজিটাল কম্পিউটারের ব্যাপক উন্নতি সাধনের স্বীকৃতিটা স্টিভ জবসেরই প্রাপ্য, যিনি একই সঙ্গে অ্যাপল ইনকরপোরেটেড-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং এতোদিন ধরে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তবে একটা সময় আসে যখন সবাইকেই পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। স্টিভ জবস বাধ্যতামূলকভাবে নয়, বরং স্বেচ্ছায়ই সেই সময়টাকে করে নিয়েছেন। অ্যাপলের বোর্ড অফ ডিরেক্টরের কাছে জমা দেয়া এক চিঠিতে তিনি তার পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন এবং বোর্ড সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সিইও’র পদ থেকে বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদে বহাল করেছেন। অন্যদিকে অ্যাপলের নতুন সিইও হিসেবে টিম কুককে নিয়োজিত করেছে অ্যাপলের বোর্ড অফ ডিরেক্টরস।
স্টিভ জবসের এই আকস্মিক পদত্যাগের ঘটনা যেন পুরো প্রযুক্তি বিশ্বকে ঝাকিয়ে দিয়েছে। প্রতিটি সংবাদমাধ্যমসহ টুইটারে সবাই স্টিভ জবসকে নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। স্টিভ জবস কেবল একজন সফল উদ্যোক্তাই নন, বরং একইসঙ্গে অনেকের আদর্শও বটে। বিশেষ করে ২০০৫ সালে স্টিভ জবসের বিখ্যাত বক্তৃতা এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্ধৃতি তার মধ্যকার সৃজনশীলতারই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
স্টিভ জবস পদত্যাগ করলেও একেবারে অ্যাপল ছেড়ে যাননি তিনি। তবে অ্যাপলের চেয়ারম্যানের চেয়ে সিইও’র উপরই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত অনেকাংশে নির্ভর করে, কেননা সিইও প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি পরিচালনা করেন। তাই সবার দৃষ্টি এখন নতুন সিইও হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত টিম কুকের দিকে।
উল্লেখ্য, অ্যাপলের সিইও পদ থেকে এর আগে একবার স্টিভ জবসে অপসারণ করা হয়। পরে স্টিভ জবস পিক্সার এনিমেশনস এর যাত্রা শুরু করেন। অবশ্য তৎকালীন বোর্ডের সদস্যরা পরে তাদের ভুল বুঝতে পেরে স্টিভ জবসকে আবারও পদে বহাল করেন। অর্থাৎ, দুইবারের সিইও হিসেবে স্টিভ জবসের কর্মজীবনের এখানেই ইতি। এবার তিনি থাকবে অ্যাপল বোর্ড অফ ডিরেক্টরের চেয়ারম্যানের পদে, আর অ্যাপল চালাবে টিম কুক।