ফেসবুক। নীল সাদার এই জগতটি ধীরে ধীরে আমাদের একটি নির্ভরযোগ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মার্ক জাকারবার্গ নামের এক তরুণের হাত ধরে উঠে এসেছিল যোগাযোগের সামাজিক এই প্ল্যাটফর্ম। এরপরের গল্পটা সবারই জানা। বলা হয়ে থাকে যে, পৃথিবীর মাঝারি আকারের যে কোন একটি দেশের মোট জনসংখ্যার চাইতে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশী। আপনি জানেন কি, প্রতি মিনিটে প্রায় ২০০০ মানুষ একইসাথে ফেসবুকে লগ ইন করে থাকে? বন্ধুবান্ধুব, আত্মীয় স্বজন, নানা ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক কাজ ইত্যাদি ফেসবুক ছাড়া সম্পাদনই হয় না।
এত কথা কেন বলছি? কারণ, আজ ফেসবুকের জন্মদিন। হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেকদূর এগিয়ে এসেছে ফেসবুক। আরো এগিয়ে যাক এই কামনা করে আজকের আলোচনা শুরু করা যাক। ফেসবুকের বেশ মজার মজার কিছু তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আলোচনাঃ
১) অন্তরালে কে ছিলেন?
ফেসবুক যখন প্রথম চালু করা হয়, তখন এর বাইনারী কোডের পেছনে আবছাভাবে একটি মুখ দেখা যেত। পরবর্তীতে বোঝা যায়, ফেসবুকের “প্রথম মুখ” হচ্ছেন বিখ্যাত অভিনেতা আল পাচিনো।
২) ফেসবুকের প্রথম লগ্নিকারকঃ
পে-প্যাল নামক ওয়েবসাইটের সিইও পিটার থিয়েল সর্বপ্রথম ফেসবুককে ২০০৪ সালে অর্থ লগ্নি করে সাহায্য করেন। কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন অচিরেই এই সামাজিক মাধ্যম বেশ বড় একটি ধাক্কা দিতে যাচ্ছে পৃথিবীবাসীকে। ধারণা করুন তো এই অর্থের পরিমাণ কত? ৫০,০০০ ডলার মাত্র!
৩) ডোমেইন কত টাকা দিয়ে নেয়া হয়েছিলঃ
www.facebook.com এই ডোমেইনটি জাকারবার্গের পক্ষ হতে ন্যাপস্টার নামক পডকাস্টার সাইটের কো-ফাউন্ডার শন পার্কার ২ লক্ষ ডলারে ক্রয় করেন।
৪) নীল সাদা কেন?
আপনি জানেন কি? মার্ক জাকারবার্গ একজন বর্ণান্ধ। তিনি লাল ও সবুজ রঙ এর মাঝে পার্থক্য ধরতে পারেন না। তাই ফেসবুকের এই সাইটের রঙ নীল ও সাদা করা হয়েছে। এছাড়াও জাকারবার্গ বলেন যে নীল ও সাদা রঙ মনের প্রশান্তির জন্য খুবই উপকারী।
৫) “লাইক” নাকি অন্যকিছু?
ফেসবুকের অন্যতম প্রধান প্রকৌশলী অ্যান্ড্রিউ বসওয়ার্থ বলেন যে, প্রথমে ফেসবুকের যে “লাইক” বাটনটি রয়েছে, এটিকে “অ্যাওসাম”(awesome) বাটন হিসেবে চালু করার কথা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা লাইক বাটন হিসেবেই সবার কাছে বেশী জনপ্রিয়তা লাভ করে।
৬) তথ্য ধারণক্ষমতা কত?
প্রথমেই আপনাদের একটি মজার কথা বলি। এক মিলিয়ন গিগাবাইটে হচ্ছে এক পেটাবাইট। সমগ্র বিশ্বে এ পর্যন্ত যে সমস্ত লেখা রয়েছে (যে কোন ভাষায়) তা যদি এক করা হয় তাহলে মোট পরিমাণ হবে ৫০ পেটাবাইট! এবার ধারণা করুন ফেসবুকে সমগ্র বিশ্বের ব্যবহারকারীদের কতটুকু তথ্য ধারণ করা আছে? প্রায় ৩০০ পেটাবাইট!
৭) অর্থনীতিতে ভূমিকা কি?
২০১৬ সালের একটি তথ্যমতে জানা গিয়েছে সে বছর ফেসবুকের মোট অর্থনৈতিক ভূমিকা ছিল প্রায় ৩৪৫ বিলিয়ন ডলার। এছাড়াও সমগ্র বিশ্বের মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রায় ৪৬ শতাংশ ব্যবসা বৃদ্ধি ও প্রচারে সাহায্য করে ফেসবুক।
ফেসবুকের নানান উপকারিতা কিংবা নানান বর্ণনা এক বসায় লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। কেবল এটুকুই আশা করতে পারি যে যোগাযোগের বিশাল এই প্ল্যাটফর্ম আরো এগিয়ে যাক, বাড়ুক সম্ভাবনার আরো নতুন নতুন দুয়ার।
সূত্রঃ wordstream.com