রবার্ট লাঙার এবং তার সহ-বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল হচ্ছে সেকেন্ডারি ত্বক। বছর কয়েক আগে অলিভো ল্যাব থেকে পরীক্ষামূলকভাবে একটি ক্রিম বাজারে ছাড়া হয় তারই ধারাবাহিকতায় এবং সাফল্যে পরবর্তীতে সেকেন্ডারি ত্বক তৈরি করা হয়। এটি মূলত এক ধরণের ক্রিম যা ত্বকের উপর ব্যবহারের ফলে একধরনের আস্তরণ পরে এবং পরবর্তীতে সেকেন্ডারি ত্বক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
নতুন এই সেকেন্ডারি ত্বক “সোরিয়াসিস” এর মত রোগ থেকে মুক্ত রাখবে। অলিভো এবং প্রফেসর লাঙার বেশ কিছু বছর আগে এমআইটি ল্যাবে একটি ক্রিম তৈরি করেছিলেন যা বাজারে ৫০০ ডলারের ট্যাগে বিক্রি হয়েছিল এবং সেটার প্রচার করেছিলেন হলিউডের অভিনেত্রী জেনিফার আনিসটন।
ল্যাবে তৈরি এই সেকেন্ডারি ত্বকে আসল ত্বকের মতই ঘাম বের হয় এবং লোম গজায়।
হ্যান্ডারসন বলেন“আমার মনে হয় তারা প্রসাধনী হিসেবে এটি তৈরি করেছে এবং বাজারে ভালো কোন চোখের ক্রিম নেই যা চোখের নিচের দাগ এবং বয়সের ছাপ দূর করতে পারে,সেক্ষেত্রে এটি যদি ভালোভাবে কাজ করে তবে এর ব্যাপক ব্যবসায়িক সাফল্য সুনিশ্চিত।”
ভিনসেন্ট ফ্যালেনগা প্রফেসর অফ ডার্মাটালোজি অফ বোসটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন
বলেন, “এই ত্বক ত্বকের যাবতীয় রোগ ও উপসর্গের উপশম করতে সক্ষম হবে। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বিভিন্ন রোগ এবং দুর্ঘটনার কারনে সংকুচিত হয়ে যায়।কিন্তু এই নতুন ত্বক সার্জারি এবং আগুনে পোড়া রোগীদের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে।”
শুধু তাই নয়, এটি কপালের বলিরেখা,চোখের নিচে দাগ এবং বয়সের ছাপ দূর করতে সক্ষম।
নতুন এই ত্বক দুই ধাপে প্রয়োগ করা হয় এবং তা আসল ত্বককে শক্তিশালী করে। নতুন এই ত্বকের এই ক্ষমতা আছে যে কাউকে ৪০ বছর কমিয়ে তারুণ্য এনে দিতে পারে তবে তা ২৪ ঘণ্টার জন্য।
বিজ্ঞানীদের অভিমত সিলিকন এর উপর ভিত্তি করে তৈরি “বায়োমেট্রিক পর্দা” চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে, ডার্মাটাইটিস ও এধরনের অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে।
লাঙ্গার আরও বলেন “আমরা নতুন তৈরি এই ত্বকের সাফল্য নিয়ে খুবই উত্তেজিত এবং খুশি এবং আমরা নিকট ভবিষ্যতে চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীদের উপর নতুন তৈরি এই ত্বকের ব্যবহার সফলভাবে ব্যবহার করা হবে।”
ক্যামব্রিডজ এর একটি কোম্পানি অলিভা ল্যাব এর দীর্ঘ গবেষণায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’র ডার্মাটালোজির প্রফেসর ড. মুরাদ আলম বলেন, “যদিও এটি একটি ভালো আবিষ্কার তথাপি এটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রাথমিক পরীক্ষার ল্যাবগত সাফল্য যদি এর ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও থাকে তবে এটি একটি অনন্য চাহিদায় পরিণত হবে।”
আশা করা যায় রূপচর্চা এবং বিউটিফিকেশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম ত্বক মানুষের জীবনের গল্প বদলে দেবে। চর্মজাতীয় রোগের চিকিৎসা এবং প্ল্যাস্টিক সার্জারির জগতে এক নতুন আলোড়ন
সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে কৃত্রিম ত্বক।