রাজনৈতিকভাবে ‘নিরপেক্ষ’ পরিচয় দেওয়া ফেসবুক এখন নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করার জন্য ‘চাপের মধ্যেই আছে’।উদার পক্ষপাতি স্টোরি অনলাইনে প্রচারের দায়ে ফেসবুকের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বেনামি সূত্র থেকে অভিযোগ করা হলে করলে ফেসবুককে এই সমস্যায় পড়তে হয়ে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
বুধবার বিকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ ফেসবুকের নীতির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি এখন কর্মচারীদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অবগত করতে আর তা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ‘কনজারভেটিভ থিংক ট্যাংক’ নামে পরিচত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জননীতিমালাবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (এইআই) -এর প্রেসিডেন্ট আর্থার ব্রুকস-কে স্যান্ডবার্গ বলেন, “আমরা রাজনৈতিক পক্ষপাতে একটি ম্যানেজিং-বায়াস মডিউল যোগ করতে যাচ্ছি।”
‘ম্যানেজিং আনকনশাস বায়াস’ নামের ফেসবুকের কিছু প্রশিক্ষণ ভিডিও আছে, যা কর্মচারীদের নিজেদের ব্যক্তিগত পক্ষপাতিত্ব সম্পর্কে অবগত করায় আর কীভাবে সেগুলোকে বাঁধা দেওয়া যায় তা শেখায়। বর্তমান ভিডিওগুলো মূলত জাতি আর যৌন প্রবৃত্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বানানো হয়েছে।
স্যান্ডবার্গ জানান, নতুন রাজনৈতিক পক্ষপাত মডিউলটি মানুষকে ভিন্ন মতাদর্শ বুঝতে আর সে সম্পর্কে মুক্তমন রাখতে সহায়তা করবে। মডিউলটি কখন ছাড়া হবে তা নিয়ে এখনও কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি বলে জানান ফেসবুকের একজন মুখপাত্র। মডিউলটিতে কী কী থাকবে সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
মে মাসের শুরুর দিকে গিজমোডো’র একটি প্রতিবেদন ফেসবুকের দিকে অভিযোগ তুলে বলে, ‘ট্রেন্ডিং টপিকস’ পরিচালনাকারী দলটি নিয়মিত রক্ষণশীল সংবাদগুলো গোপন করছে। প্রতিবেদনটি কিছু সদস্যকে অভিযুক্ত করে বলে, ফেসবুকের প্রচারিত খবরে তারা উদার পক্ষপাত ‘ইনজেক্ট’ করছে।
ফেসবুক তার ‘একটি ভাবাদর্শের উপর আরেকটি ভাবাদর্শের অগ্রাধিকার নিষিদ্ধ’-এর নীতি পালন করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি তার দলের নিয়মিত অডিটও পরিচালনা করে।স্যান্ডবার্গ বুধবার এই নীতিগুলোরও পুনরাবৃত্তি করেন।
“ফেসবুক কারো ভেতরে কিছু উদ্বুদ্ধ করতে যাবে না,” তিনি বলেন। “আমাদের কোনো দৃষ্টিকোণ নেই। “আমরা আপনাদের কোনো দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করানোর চেষ্টা করছি না।“
প্রতি মাসে ১৬৫ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে – আর এর ইউজার বেইস বাড়ছেই। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কনটেন্ট প্রকাশ আর বণ্টনের চুক্তি তাদের যতই বাড়ছে, খবরের উপর ফেসবুকের কর্তৃত্ব নিয়ে মানুষের উদ্বেগও বাড়ছে।
বুধবারে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে, স্যান্ডবার্গ কেবল ‘এটি সত্য নয়’ বলেন।
“আমরা যে শিল্পের মধ্যে আছি সে সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা আছে – আমরা একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। আমরা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান না, সে কারণে আমরা সাংবাদিক নিয়োগ করার চেষ্টা করছি না আর আমরা খবর লেখার চেষ্টাও করছি না।