এতোদিন ধারণা করা হত, মানুষের পরপরই শিম্পাঞ্জী প্রাণীকুলের মাঝে সবচেয়ে বুদ্ধিমান। তারা অনেকটাই আমাদের মত, আমাদের ডি এন এ এর প্রায় ৯৯ শতাংশই তাদের সাথে মিলে যায়। ৬-৭ মিলিয়ন বছর আগে তাদের পূর্বপুরুষ থেকেই বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান মানুষের আবির্ভাব।
শিম্পাঞ্জীরা নিজেরা চিন্তা করতে পারে, সাংকেতিক ভাষা নিয়ে ভাবনার ভালো দক্ষতা তাদের মাঝে রয়েছে। তাদের মাঝে আবেগ রয়েছে, যা তারা প্রকাশ করতে পারে ও বুঝতে পারে। নানা ধরণের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে তারা বেশ দক্ষ এবং আমাদের মত তারাও তাদের সমাজে বেশ সামাজিকতা মেনে চলে। আমাদের পরে প্রাণীকুলের মাঝে তাদের সবচাইতে বুদ্ধিমান হিসেবে ধরে নেয়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু নতুন একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে, দাঁড়কাক শিম্পাঞ্জীর মতই সমান বুদ্ধি ধরে। জেনে অবাক হবেন যে এত ছোট একটি পাখি কেমন করে এত বড় শিম্পাঞ্জীর সাথে প্রতিযোগিতায় এল। গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, আকারটা কোন ব্যপারই না। সবকিছু নির্ভর করছে নিউরনের ঘনত্বের ওপর এবং মস্তিষ্কের গঠনের ওপর।
গবেষকরা কেমন করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারলেন? তারা বেশ কয়েকটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পেরেছেন। প্রায় ৩৪টি প্রাণীর ওপর তারা একই পরীক্ষা করে র্যাংক এর ভিত্তিতে তাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। তাদের আবাস, মিলেমিশে থাকার প্রবণতা, বুঝতে পারার ক্ষমতা ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে তারা বলছেন যে শিম্পাঞ্জী এবং দাঁড়কাকের বুদ্ধির ধরণ ও মাত্রা একই পর্যায়ের। তাদের একটি পরীক্ষা ছিল একটি আবদ্ধ জায়গায় খাবার রেখে দেয়া। প্রাণীগুলো কি করে খাবারটা বের করে নেয় তা দেখাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। পরীক্ষায় দেখা গেল যে প্রায় সব প্রাণীই খাবারটি সরাসরি বের করতে চাইছে। কিন্তু দাঁড়কাক ও শিম্পাঞ্জী বেশ মাথা খাটিয়ে ঐ বদ্ধ জায়গা থেকে খাবারটি বের করতে সমর্থ হয়।
এর আগেও এই পরীক্ষাগুলো বেশ কিছু প্রাণীকে নিয়ে করা হয়েছিল কিন্তু কোন পাখি এই পরীক্ষার মাঝে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
ডলফিনকেও প্রাণীকুলের মাঝে খুবই বুদ্ধিমান প্রাণী বলে ধরে নেয়া হয়। তারা নিজেদের আয়নায় চিনতে পারে, নিজেদের মাঝে যোগাযোগ করবার জন্য তাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। নানা ধরণের সমস্যা সমাধান করবার জন্য তাদের বুদ্ধিমত্তা রয়েছে এবং তারা খাবারের রেসিপিও অনুসরণ করতে পারে।
এছাড়া শূকরদের মাঝেও প্রখর স্মৃতিশক্তির ধারণা পাওয়া গিয়েছে। তারা সাংকেতিক ভাষা বুঝতে পারে পরিচর্যা করা হলে। দলবেঁধে থাকবার ফলে তাদের মাঝে সামাজিকীকরণের একটি প্রক্রিয়া দেখা যায়।
সূত্রঃ স্মিথসোনিয়ান