আশপাশে অনেকেই বসে আছে, কিন্তু মশাগুলো শুধু আপনাকে কামড়াচ্ছে। যেন ওদের একমাত্র লক্ষ্য আপনাকে রক্তশূন্য করা! যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে যখন বললেন, তখন হয়তো আশপাশের কেউ হেসে বলে উঠল- ‘আরে, আপনার রক্ত মিষ্টি বলেই মশা খাচ্ছে।’

কিন্তু আসল কারণটা কী?

10917345_10153596105233975_2488336988353862161_n

দুবাইয়ের অ্যাস্টার মেডিক্যাল সেন্টারের ফিজিসিয়ান ড. এস রামকুমার জানালেন সে কারণ। তিনি জানান, মশার ঘ্রাণশক্তি খুব প্রখর। এরা মানুষের গায়ের গন্ধ ভালোভাবে শুঁকতে পারে। তা সে সুগন্ধ হোক অথবা দুর্গন্ধ। গন্ধ শুঁকেই শিকার পছন্দ করে মশা।

‘মশা পশুদের চেয়ে মানুষের গায়ে হুল ফোটাতে বেশি পছন্দ করে। এর কারণ মানুষের জিন ও গায়ের গন্ধ। মানুষের ত্বকে ‘সুলকাটন’ নামে এক ধরনের ক্যামিক্যাল থাকে, যা মশাকে আকর্ষণ করে।’ এ ছাড়া কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ও অক্টেনল নামের এক ধরনের কেমিক্যালের কারণেও মশার আক্রমণের শিকার হয় মানুষ। রামকুমার জানান, যেসব মানুষ ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়ে, যাদের ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেশি, গর্ভবতী নারী এবং যাদের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ তারাই মশাদের পছন্দের তালিকায় থাকে।

এ ছাড়া যারা কড়া সুগন্ধী ব্যবহার করেন, বেশি ঘামেন এবং শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে তাদেরও হুল ফোটাতে পছন্দ করে মশা।  তাই বলে যদি ভেবে থাকেন মশা শুধু মানুষকেই কামড়ায়, তাহলে ভুল করবেন।

দুবাইয়ে বন্যপ্রাণী ও চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. রেজা খান গালফ নিউজকে জানান, মশা মানুষ ছাড়াও প্রাণীদেরও কামড়ে থাকে। এই যেমন- ব্যাঙ। বিশেষজ্ঞরা শুধু মশার কামড়ানোর কারণই জানাননি, মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচার কয়েকটি উপায়ও জানিয়েছেন। রামকুমার জানান, মশা যে জায়গায় কামড়িয়েছে তা না চুলকানোই ভালো। কারণ, একবার চুলকালে বারবার চুলকাতে ইচ্ছে করবে। এর ফলে ইনফেকশন হতে পারে।

তিনি জানান, মশার কামড়ানোর জায়গাটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি জায়গাটি খুব চুলকায় ও ব্যথা করে তাহলে অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েডস ও অ্যানালজেসিক সমৃদ্ধ কোনো ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। তিনি আরো জানান, মশার কামড়ের ফলে অনেক সময় জ্বর হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের র‌্যাশও উঠতে পারে। তবে কোথাও বেড়াতে গেলে সেখানকার মশাবাহিত রোগগুলোও জেনে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সূত্র: নয়া দিগন্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here