৩। প্রতীক কি? নিন্মক্ত মৌলগুলোর ল্যাটিন নাম ও প্রতীক লিখ।
সোডিয়াম, পটাশিয়াম, মারকারি/পারদ, গোল্ড/সোনা, টিন, লেড/সীসা।
উত্তরঃ কোন মৌলের পূর্ণ নামের সংক্ষীপ্ত রুপ বা প্রকাশকে প্রতীক বলে।
মৌলের নাম মৌলের ল্যাটিন নাম মৌলের প্রতীক
সোডিয়াম | Natrium | Na |
পটাসিয়াম | Kalium | K |
মারকারি/পারদ | Hydrargyrum | Hg |
গোল্ড/সোনা | Aurum | Au |
টিন | Stannum | Sn |
লেড/সীসা | Plumbum | Pb |
৪। যোজ্যতা বা যোজনী কি? যোজ্যতার ইলেকট্রনীয় মতবাদটি লিখ।
উত্তরঃ কোন মৌলের একটি পরমাণু হাইড্রোজেন বা তার সমতুল্য অন্য মৌলের যত সংখ্যক পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয় অথবা কোন যৌগ হতে হাইড্রোজেনের যত সংখ্যক পরমাণু প্রতিস্থাপিত করতে পারে সে সংখ্যাকে ঐ মৌলের যোজ্যতা বা যোজনী বলে। যোজ্যতার ইলেকট্রনীয় মতবাদঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌলের একটি পরমাণু অপর একটি মৌলের পরমাণু হতে যে কয়টি ইলেকট্রন গ্রহন অথবা এতে প্রদান করে অথবা শেয়ার করে ইলেকট্রনের সে সংখ্যাকে ঐ মৌলটির যোজনী বলে।
৫। যৌগমূলক কি? দুটি ধনাÍক ও দুটি ঋণাত্মক যৌগমূলকের নাম লিখ।
উত্তরঃ দুই বা ততোধিক মৌলের একাধিক পরমাণু একত্রে সংযুক্ত হয়ে একটি পরমাণু গ্র“প গঠন করে, যা বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সময় অপরিবর্তিত থেকে একটি মাত্র পরমাণুর ন্যায় আচরণ করে ঐ গ্র“পটিকে মূলক বা যৌগমূলক বলে। দুইটি ধনাত্তক যৌগমূলকের নাম: অ্যামোনিয়াম NH4+ ও ফসফোনিয়াম PH4+ ।
দুইটি ঋনাত্তক যৌগমূলকের নাম: নাইট্রেট NO3‑ ও সালফেট SO4– ।
৬। তাপহারী ও তাপোৎপাদী বিক্রিয়া কাকে বলে? উহাদের দুইটি করে উদাহরন দাও।
উত্তরঃ তাপহারী বিক্রিয়া: যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে তাপশক্তির শোষণ এবং বিক্রিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা হ্রাস পায়, তাকে তাপহারী বিক্রিয়া বলে। যেমনঃ- ১) উচ্চ তাপমাত্রায় নাইট্রোজেন ও অক্রিজেন তাপ শোষন করে নাইট্রিক অক্রাইড উৎপন্ন করে।
N2 +O2 = 2NO – তাপ
২) অধিক তাপমাত্রায় কার্বন ও হাইড্রোজেন বিক্রিয়া করে অ্যাসিটিলিন উৎপন্ন হয় এবং তাপের শোষন ঘটে।
2C + H2 = C2H2 –
তাপউৎপাদী বিক্রিয়া: যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে তাপশক্তি উৎপন্ন হয় এবং বিক্রিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, তাকে তাপউৎপাদী বিক্রিয়া বলে যেমনঃ- ১) কয়লাকে পোড়ালে কার্বন ডাইঅক্রাইড উৎপন্ন হয় এবং তাপের উদ্ভব ঘটে।
C + O2 = CO2 + তাপ
২) বায়ুতে হাইড্রোজেন দহনের ফলে পানি ও তাপ উৎপন্ন হয়।
2H2 + O2 = 2H2O + তাপ
৭। গাঠনিক সংকেত কি? নিচের যৌগগুলোর গাঠনিক সংকেত লিখ।
সোডিয়াম কার্বনেট, সালফিউরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড, ফসফোরিক এসিড, ক্যালসিয়াম ফসফেট, সোডিয়াম বাইকার্বনেট
উত্তরঃ যে সংকেত দ্বারা কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের অণুতে তার বিভিন্ন পরমাণুসমূহ পরস্পরের সাথে কিভাবে যুক্ত আছে তা প্রতীক ও ক্ষুদ্ররেখা এর মাধ্যমে দেখানো হয় তাকে বস্তুটির গাঠনিক সংকেত বলা হয়।
সোডিয়াম কার্বনেট (Na2CO3) এর গাঠনিক সংকেত:
সালফিউরিক এসিড (H2SO4) এর গাঠনিক সংকেত:
নাইট্রিক এসিড (HNO3) এর গাঠনিক সংকেত:
ফসফোরিক এসিড (H3PO4) এর গাঠনিক সংকেত:
ক্যালসিয়াম ফসফেট {Ca3(PO4)2} এর গাঠনিক সংকেত:
সোডিয়াম বাইকার্বনেট (NaHCO3) এর গাঠনিক সংকেত:
৮। সংজ্ঞা সহ উদাহরন দাওঃ ক) পরিবর্তনশীল যোজনী খ) সুপ্ত যোজনী গ) ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন
উত্তরঃ পরিবর্তনশীল যোজনী : কোন মৌল যদি একাধিক যোজনী প্রকাশ করে তাকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলে। সুপ্ত যোজনী : কোন মৌলের সর্বোচ্চ যোজনী ও সক্রীয় যোজনী-র মধ্যে পার্থক্যকে সুপ্ত যোজনী বলে।ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন: ভৌত পরিবর্তন: যে পরিবর্তনের ফলে পদার্থের শুধু বাহ্যিক আকার বা অবস্থার পরিবর্তন হয় কিন্তু আণবিক গঠনের কোন পরিবর্তন হয় না, তাকে ভৌত বা অবস্থানগত পরিবর্তন বলে। রাসায়নিক পরিবর্তন: যে পরিবর্তনের ফলে এক বা একাধিক বস্তু প্রত্যেকে তার নিজস্ব সত্তা হারিয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট এক বা একাধিক বস্তুতে পরিণত হয়, তাকে রাসায়নিক পরিবর্তন বলে।
৯। P2O3 , PCl3 যৌগে ফসফরাসের (P) সুপ্ত যোয্যতা কত?
উত্তরঃ P2O3 যৌগে P এর সর্বোচ্চ যোজনী = ৫
P2O3 যৌগে P এর সক্রীয় যোজনী = ৩
——————————————–
সুপ্ত যোজনী = ২
১০। SO3 যৌগে (S) এর সুপ্ত যোয্যতা কত?
উত্তরঃ SO3 যৌগে S এর সর্বোচ্চ যোজনী = ৬
SO3যৌগে S এর সক্রীয় যোজনী = ৬
—————————————–
সুপ্ত যোজনী = ০
১১। রাসায়নিক সমীকরণ কি? নিচের রাসায়নিক সমীকরনের তাৎপর্য লিখ।
i) H2 + Cl2 →→→ 2HCl
ii) Zn + H2SO4 →→→ ZnSO4 + H2
iii) Mg + H2SO4 →→→ MgSO4 + H2
উত্তরঃ রাসায়নিক সমীকরণ: দুই বা ততোধিক মৌল বা যৌগের মধ্যে পারস্পরিক রাসায়নিক বিক্রিয়াঘটিত পরিবর্তন যা কতগুলো চিহ্ন, প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়, রাসায়নিক সমীকরণ বলে।
i) H2 + Cl2 2HCl সমীকরনটির তাৎপর্য:
গুণগত তাৎপর্য:
হাইড্রোজেন ক্লোরিনের সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রো ক্লোরাইড উৎপন্ন করে।
পরিমাণগত তাৎপর্য:
১) এক অণু হাইড্রোজেন এক অণু ক্লোরিনের সাথে বিক্রিয়া করে দুই অণু হাইড্রোজেন ক্লোরাইড উৎপন্ন করেছে।
২) এক ভাগ আয়তনের হাইড্রোজেন এক ভাগ আয়তনের ক্লোরিনের সাথে বিক্রিয়া করে দুই ভাগ আয়তনের হাইড্রোজেন ক্লোরাইড উৎপন্ন করেছে।
৩) বিক্রিয়ক গুলোর আনবিক ভর এবং উৎপদ গুলোর আনবিক ভর সমান হবে।
ii) Zn + H2SO4 ZnSO4 + H2 সমীকরনটির তাৎপর্য: গুণগত তাৎপর্য:
জিংক, সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে জিংক সালফেট ও হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে।পরিমাণগত তাৎপর্য:
১) এক পরমাণু জিংক এক অণু সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে এক অণু জিংক সালফেট ও এক অণু হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে।
২) এক ভাগ আয়তনের জিংক এক ভাগ আয়তনের সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে এক ভাগ আয়তনের জিংক সালফেট ও এক ভাগ আয়তনের হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে ।
৩) বিক্রিয়ক গুলোর আনবিক ভর এবং উৎপদ গুলোর আনবিক ভর সমান হবে।
iii) Mg + H2SO4 MgSO4 + H2
সমীকরনটির তাৎপর্য:গুণগত তাৎপর্য:
ম্যাগনেসিয়াম ও সালফিউরিক এসিড পরস্পর বিক্রিয়া করে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ও হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে।
পরিমাণগত তাৎপর্য:
১) এক পরমাণু ম্যাগনেসিয়াম এক অণু সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে এক অণু ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ও এক অণু হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে।
২) এক ভাগ আয়তনের ম্যাগনেসিয়াম এক ভাগ আয়তনের সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে এক ভাগ আয়তনের ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ও এক ভাগ আয়তনের হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে।
৩) বিক্রিয়ক গুলোর আনবিক ভর এবং উৎপদ গুলোর আনবিক ভর সমান হবে।
লেখকঃ Ashik Ahmed
প্রথম জেডটিতে প্রকাশিতঃ- এবং সংরক্ষিত