সৌভাগ্যবান সংখ্যা হিসেবে আমরা সাধারণত ‘৭’কে ধরে থাকি। কিন্তু জ্যোতির্বিদরা এবার এই ৭ সংখ্যাটিরই একটি ভেলকি দেখিয়েছেন। একটি নয়, দুটি নয়- সাত সাতটি পৃথিবী সদৃশ গ্রহ আবিষ্কার করেছেন যেগুলো একটি নক্ষত্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে। এই নক্ষত্রটির নাম ট্র্যাপিস্ট-১ (Trappist-1).
আরো আশ্চর্যের কথা হচ্ছে, এদের মধ্যে তিনটি গ্রহ বসবাসের উপযোগী। কারণ, এই গ্রহগুলোতে জীবন ধারণ করবার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটি রয়েছে, পানি। এই গ্রহগুলোর মাটিতে পানি বেশি গরমও নয়, আবার বেশি ঠান্ডাও নয়- বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে তারা বলছেন, এই সাতটি গ্রহের সবকয়টিতে পানি থাকতে পারে। মহাকাশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়গুলো এই আবিষ্কারকে “রেকর্ড ব্রেকিং” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ছবিসূত্রঃ গুগল
নাসার সদর দপ্তরের বিজ্ঞান মিশন বিষয়ক সহযোগী প্রশাসক থমাস যারবুখেন বলেন,
“এই আবিষ্কার আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে বাসযোগ্য দ্বিতীয় পৃথিবী খুঁজে নেয়া এখন একটি সময়ের ব্যাপার মাত্র।” তিনি আরো বলেন যে পৃথিবীর বাইরের অন্য কোন গ্রহে প্রাণ রয়েছে কি না তা জানার জন্য মানুষের মনে যে প্রশ্নের উদ্ভব ঘটে, তার উত্তর এবার শীঘ্রই খুঁজতে শুরু করবেন বিজ্ঞানীরা।
বেলজিয়ামের লীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেন,
“আমাদের সৌরজগতে জীবনের সন্ধান করা এখন খুবই সহজ ও প্রতিশ্রুতিশীল হয়ে যাচ্ছে।”

ছবিসূত্রঃ গুগল
একই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে এমন এতোগুলো গ্রহের সন্ধান এই প্রথমবারের মত বিজ্ঞানীরা পেলেন। এদের মধ্যে সপ্তম যে গ্রহটি রয়েছে, সেটি সূর্য থেকে ৪০ বছর দূরে অবস্থিত। আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদকে যতটুকু দূরত্ব দেখতে পাই, ঠিক তেমনি এই গ্রহটি থেকে সূর্যকে সেভাবে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আরো ১২৮৪টি এক্সোপ্ল্যানেটের আবিষ্কারের ঘোষণা নাসারঃ
এই তিনটি গ্রহ যে বসবাসযোগ্য অবস্থানের মধ্যে রয়েছে, এদেরকে “গোল্ডিলক জোন” হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এদের আলাদা নাম হচ্ছে ট্র্যাপিস্ট ১ এর ‘ই’, ‘এফ’, ‘জি’। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে এদের আকার প্রায় পৃথিবীর কাছাকাছি এবং সূর্যের যতটুকু রশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছায়, ঠিক এই গ্রহ তিনটিতেও পৌছায়।
বিজ্ঞানীরা আমাদের কাছাকাছি সৌরমন্ডলে এমন আরো ১২৮৪টি গ্রহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে সেগুলোও আবিষ্কারের অপেক্ষায় রয়েছে।
যেভাবে আবিষ্কার করা হলঃ
বিজ্ঞানীরা এই আবিষ্কার যে টেলিস্কোপের সাহায্যে করেন, তার নাম হচ্ছে “স্পিতজার স্পেস টেলিস্কোপ”। যে পদ্ধতির সহায়তায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, তার নাম হচ্ছে, “ট্র্যানজিট মেথড”। এই পদ্ধতির সাহায্যে একটি গ্রহ যখন তার নক্ষত্রের কক্ষপথকে ঘিরে সূর্যহের নিকটে চলে আসে, তখন নক্ষত্রটি কিছু সময়ের জন্য টিম টিম করে আলোকিত হয় বা ম্লান হয়ে যায়। তখন বিজ্ঞানীরা গ্রহটিকে দেখতে সমর্থ হন। .
সূত্রঃ ফক্স নিউজ