পরিবেশের কি করে ভালো একটি অবস্থার পরিবর্তন করা যায়,তা নিয়ে গবেষকদের চিন্তার কোন শেষ নেই। বিশেষ করে, পরিবেশের জন্য একটি অতি ভয়াবহ বিপদ হচ্ছে আমাদের চারপাশের রাস্তাঘাট আমরা কেমন করে রাখছি। গাড়ির কালো ধোঁয়া, অপরিপক্ক গাড়ির পার্টস কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির পার্টস ব্যবহার করার কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পরে। তবে এবার গবেষণারা সে সমস্যা দূর করবার জন্য নতুন একটি হাতিয়ার নিয়ে আসছেন এবং আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, এ হাতিয়ারটি হচ্ছে টমেটোর খোসা এবং ডিমের খোসা!
ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক গবেষণা করে দেখেছেন যে, আমরা খাবারের শেষে যে ধরণের উচ্ছিষ্ট তৈরি করে থাকি, তা দিয়ে গাড়ির রাবারের টায়ারে বেশ ভালভাবে ব্যবহার করা যায়।কলকারখানায় এটি নানাভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। গাড়ির টায়ারে ফিলার হিসেবে যে রাবার ব্যবহার করা হয়, তার সাথে এই টমেটোর খোসা এবং ডিমের খোসা বেশ ভালোভাবে মিশে যায়।খাবারের উচ্ছিষ্ট এই কার্বনের অংশকে বেশ ভালোভাবেই প্রতিস্থাপিত করতে পারবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

ছবি সুত্রঃ গুগল
পূর্বে গাড়ির টায়ারে যে পেট্রোলিয়াম জাতীয় ফিলার ব্যবহার করা হত, তা বেশ কষ্টসাধ্য হবার কারণে গবেষকেরা এর বিকল্প চিন্তা হিসেবে নতুন কিছু খুঁজেছিলেন এতদিন।
পরিবেশের ওপর কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবেঃ
গবেষকেরা মনে করছেন যে, এই ধরণের পদক্ষেপ নেবার কারণে গাড়ির টায়ারের যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিবেশের ওপর পড়ছে, তা থেকে পরিবেশ অনেকটাই মুক্তি পাবে। এছাড়াও জ্বালানী হিসেবে এদের ব্যবহার পরিবেশবৎসল হবে বলে ধারনা বিজ্ঞানীদের।
রাষ্ট্রের কতটা উপকার হবেঃ
যেসব রাষ্ট্র জ্বালানীর ক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম জাতীয় তেল কিংবা খনিজ তেলের ওপর খুব বেশি মাত্রায় নির্ভর করে থাকে, সেসব দেশের জন্য এই নতুন পদক্ষেপ খুবই যুগান্তকারী একটি ঘটনা হবে।এছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে জ্বালানি তেল কিনতে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে।যদি খাবারের উচ্ছিষ্ট এভাবে গাড়ির টায়ারে ব্যবহার করা হয়, তাহলে একইসাথে সেগুলো রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেশ ভালো উপযোগিতা পাবে এবং একইসাথে দেশের মূল্যবান সম্পদ বাঁচিয়ে দেবে।
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, খাদ্যের যে সকল উচ্ছিষ্ট রয়েছে, তার বেশিরভাগই পরিবেশেই ফেরত যায় এবং তা মাটির সাথে মিশে যায়।কিন্তু এদের মাঝে কিছু অংশ রয়েছে যারা বিষাক্ত গ্যাস তৈরি করে পৃথিবীর ওজন স্তরের অবস্থা দিন দিন ভারী করছে।এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাবার জন্য বিজ্ঞানীরা বেশ কিছুদিন ধরেই এমন একটি বিকল্প অবস্থার কথা চিন্তা করছিলেন যার মাধ্যমে পরিবেশের ওপর চাপ কমানো যায়, কার্বনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমানো যায় এবং খাবারের উচ্ছিষ্টও ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়।
টমেটোর খোসা ও ডিমের খোসার ফিলার বিশিষ্ট গাড়ির টায়ার কবে আসছে বাজারে, সেটিই এখন দেখবার বিষয়।
তথ্যসূত্রঃ পপুলার সাইন্স