বিটিআরসি’র উদ্যোগ ও অর্থায়নে দেশের সকল অপারেটরের নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের তথ্য নিয়ে একটি সমন্বিত Web based interactive GIS (Geographical Information System) Map প্রনয়ণ করা হয়েছে।

বিটিআরসি’র তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতকৃত এই মানচিত্রটিতে সকল অপারেটরের নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবারের তথ্য বিভিন্ন স্তরে বিন্যাস করে প্রদর্শন করা হয়েছে। এ মানচিত্রের সহায়তায় সারাদেশের অপটিক্যাল ফাইবারের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ভিত্তিক অবস্থান, সক্ষমতাসহ বিস্তারিত কারিগরী তথ্য জানা সম্ভব হবে। সরকারি/বেসরকারি সংযোগ (Connectivity) সম্পর্কিত যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে এই GIS Map টি মৌলিক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে প্রস্তুতকৃত এই  মানচিত্রটির সংশ্লিষ্ট তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিটিআরসির পূর্বানুমোদন প্রয়োজন হবে।

উল্লেখ্য, টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী অপারেটরের অনেকের নিজস্ব নেটওয়ার্ক থাকলেও দেশব্যাপী বিস্তৃত বিভিন্ন অপারেটরের অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের কোন সমন্বিত চিত্র নীতিনির্ধারকদের নিকট না থাকায় সম্পদের সদ্ব্যবহারে (Resource Utilization) প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গঠিত Domestic Network Coordination Committee-র সভায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের নেটওয়ার্ক পরিকল্পনার (Network Planning) ক্ষেত্রে দেশব্যাপী বিস্তৃত এ সকল অপটিক্যাল নেটওয়ার্কের সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয় এবং বিটিআরসিকে একটি Interactive GIS Map প্রণয়নের দায়িত্ব দেয়া হয়।

ইতোপূর্বে টেলিকম অপারেটরদের GIS (Geographical Information System) ফরম্যাটে নিজস্ব অপটিক্যাল নেটওয়ার্কের কোন মানচিত্র ছিল না। যার ফলে আন্তঃক্রিয়াশীল মানচিত্রটি (Interactive Map)  তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি  বিটিআরসি নির্ভর হয়ে পড়ে। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ধারিত এক মাসের মধ্যে মানসম্মত ফরম্যাটে বিটিআরসি সকল টেলিকম অপারেটর হতে তথ্য সংগ্রহ করে এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় অধিনস্ত CEGIS (Center for Environmental and Geographical Information Service) কে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্যাদেশ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি দুই মাসের মধ্যে GIS Based Nationwide Optical Fiber Interactive Map প্রণয়ন এবং পরবর্তী ২ বছরের মধ্যে এ সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার  হালনাগাদ ও সম্পাদনা তথ্য (Update/Edit) করার শর্ত সাপেক্ষে কাজ শুরু করে। আগামী ২ বৎসর CEGIS মানচিত্রটি হালনাগাদ করার জন্য বিটিআরসি তার নিজস্ব কর্মকর্তাদের সামর্থ্য বৃদ্ধি করছে, ফলে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।।

টেলিকম অপারেটর হতে তথ্য সংগ্রহ, সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের বিষয়টি বিটিআরসি’র একটি নিরবিছিন্ন কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এছাড়াও বর্ণিত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের সকল টেলিকম অপারেটর এবং সিইজিআইএস-এর উপর্যুক্ত প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিগত ১১-০৮-২০১৫ তারিখে চুক্তি মোতাবেক Web Based Interactive GIS Map প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তুতকৃত Map বর্তমানে Online এ পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এছাড়াও অপটিক্যাল স্থাপনার কোন ধরনের সংশোধন কিংবা সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা নিরীক্ষণের লক্ষ্যে প্রতিটি অপারেটরকে ইতোমধ্যে স্ব স্ব GIS Map এর জন্য পৃথক পৃথক User ID এবং Password প্রদান করতঃ  CEGIS এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রথম শর্ত দেশব্যাপী বিস্তৃত একটি স্বনির্ভর বলিষ্ঠ নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে তথ্য সেবা পৌঁছে যাবে প্রান্তিক পর্যায়ে গৃহস্থের ঘরে। আর এই নেটওয়ার্কের অন্যতম মৌলিক অবকাঠামো একটি সুনির্দিষ্ট, নির্ভরযোগ্য, বলিষ্ঠ অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক। উল্লেখ্য ১৯৯৭ সাল হতেই দেশব্যাপী মোবাইল নেটওয়ার্কের সহায়তায় অবকাঠামো বিস্তৃত হয়ে এসেছে এবং পূর্বে ট্রান্সমিশনের জন্য পৃথক কোন লাইসেন্স না থাকায় অপারেটরসমূহ দেশব্যাপী সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করেছে। পরবর্তীতে অপরিকল্পিতভাবে এলাকাভিত্তিক নেটওয়ার্ক বিস্তার বন্ধের লক্ষ্যে এবং ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ককে এ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক হতে পৃথক করার উদ্দেশ্য নিয়ে ২০০৮ সালে বিটিআরসি কর্তৃক Nationwide Telecommunication Transmission Network (NTTN) গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়। এর আলোকে ২০০৯ এর জানুয়ারিতে Fiber@Home এবং ডিসেম্বরে Summit Communication Ltd. নামক প্রতিষ্ঠান দুটি Nationwide Telecommunication Transmission Network (NTTN) লাইসেন্স প্রাপ্ত হয় এবং Rollout টার্গেট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দুটি দেশব্যাপী অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করে। এছাড়া PGCB, BTCL এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে NTTN Transmission License ধারী প্রতিষ্ঠান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here