অনেক সময় হার্ড ড্রাইভ ক্র্যাশ করতেই পারে।এ থেকে নিজেকে বাঁচাতে ক্লাউড স্টোরেজও দিবে আপনাকে জায়গা। শুধু একটা স্মার্টফোন থাকলেই হল।
ফ্লপি থেকে সিডি, সেখান থেকে পেনড্রাইভ বা মেমরি কার্ড। কিন্তু এখন যা দিনকাল, তাতে ‘মেমরি’ বরং গচ্ছিত রাখুন হাওয়ায়! মানে ইন্টারনেটে। গুগ্ল ড্রাইভ তো আগেই সেই জায়গা নিয়ে নিয়েছিল। তারপর জুড়েছে ড্রপবক্স। কালে কালে সেই জায়গা নিয়ে নিচ্ছে ‘ক্লাউড’।
যে কোনও ব্রাউজার থেকে চট করে অ্যাকসেস পাওয়া যেতে পারে গুগ্ল ড্রাইভ, ড্রপবক্স কিংবা আইক্লাউডে। নিজের ইচ্ছেমতো ফাইল কিংবা ফোল্ডার সেভ করে রাখুন। প্রয়োজন মতো বার করে ব্যবহার করুন। মনে করুন, অফিসের কোনও প্রজেক্ট ওয়ার্ক তৈরি করে সেটা বাড়িতেই ফেলে চলে এলেন। সঙ্গে ইউএসবি’ও নেই। কী করবেন? ড্রাইভ বা ক্লাউডে সেভ করা থাকলে খুব সহজেই সেখান থেকে প্রজেক্ট কম্পিউটারে ট্রান্সফার করে নিন বা সরাসরি স্ট্রিম করান।তাছাড়া খুব ব্যক্তিগত কোনও ফাইল, নেহাত ফেসবুক বা হোয়াট্সঅ্যাপে শেয়ার করার নয়। সেগুলোও জমিয়ে রাখতে পারেন ক্লাউড বা ড্রাইভে। আগে থেকে স্টোর করে রাখুন। ডেটা হারানোর ভয়টা কিন্তু সত্যিই কমিয়ে দেয় এগুলো। ক্লাউড, ড্রাইভ, ড্রপবক্স— সবক’টাতেই অ্যাকাউন্ট বানিয়ে বিভিন্ন ফাইল জমিয়ে রাখুন।
আইক্লাউড বা গুগ্ল ড্রাইভে অনেক তথ্য-ফাইল ইত্যাদি ব্যাক আপ করেও রাখতে পারেন। যাতে ফোন-ল্যাপটপ চুরি গেলেও আপনার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র যেন সংরক্ষিত থাকে। অনেকে মনে করেন, একই জিনিস হার্ড ড্রাইভে সেভ করে রেখে আবার সেটাকেই অনলাইন স্টোরেজে জমিয়ে রাখার কী মানে! কিন্তু মনে রাখবেন, হার্ড ড্রাইভের চেয়েও এক্ষেত্রে ক্লাউড বা ড্রাইভ বেশি উপকারী। চট করে তথ্য হস্তান্তর হওয়ার উপায় নেই। হ্যাক হওয়ার সুযোগও কম। পাসওয়ার্ড সংরক্ষণটাও এক্ষেত্রে কার্যকরী। সম্প্রতি আইক্লাউড থেকে বহু সেলেবের ছবি হ্যাক হয়েছে বলে অ্যাপ্ল এখন আরও বেশি সতর্ক।
এই মুহূর্তে কাজের জগতে ক্লাউড এবং ড্রাইভের রমরমা বেশি থাকলেও ওয়ান ড্রাইভ কিংবা মেইল ড্রপের মতো ড্রাইভগুলোরও প্রচুর কাটতি। মেইল ড্রপ ব্যবহার করে কাউকে বড়় সাইজের ছবি বা ফাইল ই-মেল করতে চাইলে সাইজ লিমিটের তোয়াক্কা করতে হবে না। ওয়ান ড্রাইভের ব্যবহার আবার গুগ্ল ড্রাইভ বা ড্রপবক্সের মতোই। ফলে হাতে অপশন রইল প্রচুর!
গুগ্ল ড্রাইভ
১। এদের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো। কিন্তু বেশ কাজের। একটা জিমেল অ্যাকাউন্ট থাকলেই হল।
২। ফোনে তোলা বিভিন্ন ছবি এবং কনট্যাক্ট ‘মার্জ’ করে গুগ্ল ড্রাইভে সেভ করে রাখতে পারেন। তাতে ফোন হারিয়ে গেলে বা বদলালে অসুবিধায় পড়বেন না।
৩। ১৫ জিবির কাছাকাছি ফ্রি অনলাইন স্টোরেজ পাওয়া যায়। তারপর স্পেস কিনতে পারেন।
৪। যে কোনও ফাইল, ফোল্ডার কেবল ব্যক্তিগতভাবেই শেয়ার করা যায়।
৫। চেনাশোনাদের (জিমেল’এর মাধ্যমে) নিজের সার্কলে নিয়ে আসা যায়। তাতে চাইলে অনেকের মধ্যে কোনও লিঙ্ক শেয়ার করা যেতে পারে।
৬। ই-মেল পাঠানোর সময় খুব বেশি বড় ফাইল অ্যাটাচ করা যায় না। তাই ড্রাইভের মাধ্যমে একাধিক ছবি বা বড় রেজলিউশনের ছবি পাঠানো সহজ হয়ে যায়।
৭। অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস— সব রকম প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার্য।
ড্রপবক্স
১। গুগ্লের মতো কাস্টম শেয়ার করতে পারবেন না, সবটাই পাবলিক শেয়ারিং।
২। তার কারণ, লোকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে লিঙ্ক করে ড্রপবক্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। তাতে যা কিছু ড্রপবক্সে শেয়ার করছেন, আপনার লুপ’এ থাকা বাকিরাও সেগুলো দেখতে পাবেন।
৩। ড্রপবক্স ফ্রি অনলাইন স্টোরেজ দেয় মোটে ২ জিবি। কিন্তু স্পেস কিনে প্রায় ২২ জিবি মতো জায়গা পেয়ে যেতে পারেন।
৪। অনেকে আবার বন্ধুদের ইনভাইট করে তাদের স্পেসটাও নিজের সঙ্গে জুড়ে নেয়। ছবি-পোস্ট শেয়ার করার মতো ইন্টারনেট স্পেসটাও শেয়ার করা আর কী!
৫। অ্যান্ড্রয়েডে ব্যবহার করতে পারবেন। আইওএস’এও।
আইক্লাউড
১। আইফোন যাঁরা ব্যবহার করেন তাঁদের জন্য শেষ কথা আইক্লাউড। আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাক যে কোনও অ্যাপ্ল প্রডাক্ট থেকে সিনক্রোনাইজ করে এই ড্রাইভটা একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারবেন।
২। আইওএস’এ গুগ্ল ড্রাইভ এবং ড্রপবক্স ব্যবহার করা গেলেও, সিনক্রোনাইজেশনের দৌলতে ক্লাউড ব্যবহার করা সবচেয়ে সহজ।
৩। অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করার প্রশ্নই নেই। সোশ্যাল মিডিয়ার পক্ষে সেটা নিয়ে একটু খুঁতখুঁতানির জায়গা থাকলেও, যাঁরা নিজেদের ফাইল-ফোল্ডার ব্যক্তিগত ব্যবহারেই রাখতে চান তাঁদের জন্য আদর্শ।
৪। আইক্লাউডে প্রাথমিকভাবে ৫ জিবি ফ্রি অনলাইন স্টোরেজ পাওয়া যায়। পরে স্পেস কিনতে চাইলে ১ টিবি পর্যন্ত পেয়ে যাবেন।