কীট-পতঙ্গ বাহিত যেসকল রোগ রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হল জিকা ভাইরাস। সারাবিশ্বেই এটি ছড়িয়ে পড়ছে এবং এর ফলে নানা প্রাণহানি ও উপদ্রবের কথাও শোনা যাচ্ছে গোটা পৃথিবী জুড়েই। সবচেয়ে শঙ্কার কথা হল জিকা ভাইরাসের ফলে গর্ভবতী নারীরা আক্রান্ত হন বেশি এবং এর ফলে তাদের গর্ভের সন্তানের নানা ধরণের রোগ হবার আশঙ্কাও দেখা যায়।
ফ্লোরিডার মিয়ামিতে কিছু স্থানীয় অঞ্চলে এমন সব মশা পাওয়া গিয়েছে যেগুলো এই জিকা ভাইরাসের বাহক। ল্যাব টেস্ট করানোর পর বিজ্ঞানীরা জানান যে এই মশাগুলো জিকা ভাইরাসের জীবাণু বহন করছে ও এর ফলে গর্ভবতী নারীদের নানা ধরণের সমস্যা দেখা যেতে পারে।
ফ্লোরিডার কৃষি ও ভোক্তা সংগঠন জানায়, মিয়ামি বীচে কিছু পদক্ষেপ নেবার পর তিন জাতের মশা পাওয়া যায় এবং কীটনাশক ছিটানোর পর তাদের কিছু স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়। এই স্যাম্পল পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে জানা যায় যে এদের মাঝে জিকা ভাইরাসের বীজ রয়েছে।
ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, এ পর্যন্ত ফ্লোরিডাইয় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৪৯টি কিন্তু এখন পর্যন্ত মশার মাধ্যমে যে এই ভাইরাস বাহিত হতে পারে তার কোন আলামত পাওয়া যায় নি। মিয়ামি বীচে প্রাপ্ত এই মশাদের স্যাম্পলই বলে দিচ্ছে কতটা সাবধানে তাদের থাকতে হবে।
এডাম পুটনাম, কৃষি অধিদপ্তরের কমিশনার বলেন, “এই প্রাপ্তিটা বিস্ময়জনক কিন্তু হতাশাপূর্ণ নয়। আমরা আশা করি এখনো যথেষ্ট সময় আছে। এখানকার অধিবাসীদের আমরা সঠিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাই সরবরাহ করতে পারব।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রায় ১.৯ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য প্রদান করেছিলেন যাতে এই জিকা ভাইরাসের মোকাবিলা করা সম্ভব হয় এবং মশাদের দমন করা যায় কঠোরভাবে। কিন্তু স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে যে এই সাহায্যও প্রায় শেষের পথে কিন্তু উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিজ্ঞানীরা নানা উপায় ও টীকা বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই জিকা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করবার জন্য।
ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান যে আগস্ট পর্যন্তও প্রায় ৪০০০০ মশার মাঝে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল কিন্তু এই প্রথম তিন জাতের মশা পাওয়া গেল যাদের মাঝে ইতিবাচক কিছু ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
এই জিকা ভাইরাস গত বছর সর্বপ্রথম পাওয়া গিয়েছিল ব্রাজিলে। বর্তমানে এটি ল্যাতিন আমেরিকাসহ সমগ্র আমেরিকায় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে।
সূত্রঃ সায়েন্টিফিক আমেরিকান