আসসালামুআলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ অনেকদিন পর আপনাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সম্পর্কে লেখা শুরু করলাম। আপনারা হয়তোবা শিরোনাম দেখেই অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন এ আবার কেমন কথা? তবে, এ কথা সত্য যে, দিন যত গড়াচ্ছে, আমরা সবাই কিন্তু সব কিছুতেই সঙ্কটের সম্মুখিন হচ্ছি তীব্রভাবে। ধরা যাক, “পানির কথা”। যখন আমাদের এই পৃথিবী পানি শূন্য হয়ে যাবে তখন কী হবে একবার ভেবে দেখেছেন কি? কল্পনা করতেই শরীরটা শিউরে ওঠে!
পানিশূন্য পৃথিবীতে বাচঁবে না কোন পশু-পাখি, গাছ-পালা। মানবজাতিই বা বাচঁবে কেমন করে? তাই পানি সঙ্কট বর্তমান বিশ্বের একটি আলোচিত বিষয়। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের ধারণ, ২০১২ সালের মধ্যে বিশ্বের অনেক অঞ্চলে পানি ফুরিয়ে যাবে কি না, এ প্রশ্নও আজকাল দেখা দিচ্ছে অনেকের মনে। বিজ্ঞানীদের মতে ৯৭.৪ শতাংশ পানি রয়েছে সাগরে। উল্লেখ্য, সাগরের পানি আবার দুইভাগে বিভক্ত। একটি লোনা পানি ও অপরটি মিষ্টি পানি। আমরা সবাই জানি লোনা পানি কখনওই খাওয়ার উপযোগী নয়। অন্যদিকে খাওয়া-দাওয়া, ফসল ফলানো, কল-কারখানা সব জায়গাতে দরকার মিষ্টি পানির। আর তা রয়েছে মাত্র ২.৬ শতাংশ। মিষ্টি পানি যা আছে, তার ৯৮ শতাংশ রয়েছে জমাট আবস্থায় বরফ হয়ে। সেটা সাধারণভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এছাড়া, খাওয়ার যোগ্য যেটুকু সুপেয় পানি সেটুকুও দ্রুত দুষিত হয়ে যাচ্ছে। ওজন স্তরের ক্ষয়ীভবনের অব্যহত প্রক্রিয়ায়, পৃথিবীর পরিবেশ এখন মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
পরিবেশ বিপর্যয়ের বিভিন্ন উপসর্গ ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রান্তের পৃথিবীবাসীর জীবন যাত্রাকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে। কৃষি ও পানকরার উপযোগী পানি সঙ্কট তার অন্যতম কারণ। খাদ্যের জন্য মানুষকে অধিক ফসলের চিন্তা করতে হয়। আর তাই পানির উপযোগী পানির সঙ্কট ক্রমশ বাড়ছে। মানুষ যে পরিমান পানি ব্যবহার করছে তার ৭৩ শতাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি কাজে। উল্লেখ্য, কয়েক দশক ধরে পতিত ভূমিকে সেচের আওতায় আনা হচ্ছে কিন্তু মরুভূমিকে আবাদযোগ্য করতে গিয়ে প্রয়োজনীয় পানির সরবারাহ ক্রমেই কমে আসছে। পানির সঙ্কট তীব্র শোচনীয় করে তুলছে মাছ, পাখিসহ অগণিত জীবন এবং কীট-পতঙ্গের জীবন। ফলে, পানির জন্য আমাদের প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
ঢাকার অবস্থাঃ
পানি নিয়ে সংগ্রামের দৃশ্যটি দেখতে হলে বেশি দূরে দৃষ্টি দিতে হবে না। বরং রাজধানী ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকার দিকে তাকালেই বোঝা যায়। ঢাকার অধিকাংশ এলাকার অধিবাসী প্রতি নিয়তই সম্মুখীন হচ্ছেন পানি সঙ্কটের। রাতের ঘুম হারাম করে পানি সংগ্রহ করতে হয় এলাকাবাসীকে। দিনের অধিকাংশ সময়েই পানি থাকে না।
যদিও এক আধটু পান আসে, তাতে তাদের রান্না-বান্নার কাজ চালানোও মুশকিল হয় পড়ে। তাই পানি ধরে রাখার জন্য এখানকার বাসিন্দাদের রাতের ঘুম নষ্ট করে বসে থাকতে হয়। এতো কিছুর পরও কখনও পানি মেলে আরার কখনও পানি মেলে না। এত কষ্টের পরও যে পানি সংগ্রহ করে, সেই পানিও পান এবং ব্যবহারের অনুপযোগী।
পাইপ দিয়ে দুর্গন্ধময় পানি ও ট্যানারির বর্জ্য পদার্থ আসা ও পর্যাপ্ত পানি সঙ্কটে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। বিশুদ্ধ পানির সন্ধানে তাদের ছুটতে হচ্ছে প্রতিদিন এদিক-সেদিক। দুষিত পানি পান করে এলাকার মানুষ না রকম অসুখ বিসুখে ভোগেন। বিশেষ করে টাইফয়েড, চর্মরোগ প্রকোপ লক্ষ্যণীয়। বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট এখন তীব্রতর। জানী না আগামীতে আমাদের মতো উন্নতশীল দেশে বসবাসকারী মানব সন্তানের অবস্থা কী হবে। কারণ অদূর ভবিষ্যতে আমাদের এমন এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হবে, যা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না। যে সমস্যা থেকে এ যুদ্ধের সূত্রপান হবে, সেই সমস্যার আপাতত কোন সমাধান নেই। এই যুদ্ধের পরিনীতি যে কতটা ভয়াবহ হবে, তা ভাবতে গিয়ে শঙ্কিত হচ্ছেন উন্নতশীল দেশের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। অবাক হলেও সত্য যে, এ যুদ্ধ হবে পান উপযোগী পানির জন্য।
আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। আর তাই নদীকে বলা হয়ে থাকে জীবনের উৎস। এটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি এটাও সত্য যে নদীরও একটি জীবন আছে। মানুষ ও প্রানীদের জীবনের মতো নদীর জীবনেরও পরিচর্যার প্রয়োজন।
নদীর নব্যতা হারালে, পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পুনরুজ্জীবিত করতে হয়। পানির অপর নাম হলো জীবন। কিন্তু সামান্য পরিবর্তনের জন্য পানির অপর নাম মরণও হতে পারে। পৃথিবীতে দিন দিন বরফ গলে যাওয়ায় পৃথিবী হয়ে উঠছে উত্তপ্ত।
কিন্তু যদি আমরা পানির ব্যাপারে আমরা যদি এখন থেকেই সচেতন থাকি, তবে হয়তো পানির জন্য আমাদের আর যুদ্ধ করতে হবে না। পানির সঙ্কট সমাধানের ব্যাপারে বিশ্বের বড়বড় বিজ্ঞানীও তৎপর রয়েছেন। অচিরেই হয়তো পানির অফুরন্ত আধারের সন্ধান পেয়ে যাবেন তারা। ফলে, পৃথিবীর মানুষ ভয়াবহ পানির যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে আশা করা যায়।
বিঃদ্রঃ উপরে আমি যা কিছু আলোচনা করেছি তা সবই আমার নিজের মন্তব্য। তাই কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন এবং দয়া করে বলবেন। কেমন হয়েছে তাও বলবেন।
ধন্যবাদ।
-মোঃ আব্দুর রহিম
তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক আমার ওয়েব সাইটঃ www.it-world.tk
আগামী দশ বছর পর ঢাকাতে বাসযোগ্য কোন পরিবেশ হয়তো থাকবে না। আমরা সবাই এই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করি বা না করি, সচেতনতার দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছি। সুন্দর একটি পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কিন্তু আপনার শিরনাম বদলাতে হবে। কারণ পৃথিবী পানি শূন্য হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে পৃথিবী সুপেয়ো পানি শূন্য হতে পারে।
ভাইয়া প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ। এই পোষ্টা এখন এডিট করার ক্ষমতা এখন আমার হাতে নেই। তাই @ব্লগ এডমিন এর কাছে আমার অনুরোধ যে পোষ্টার শিরনাম পরিবর্তনের জন্য।
প্রতিটি লেখককে তার নিজের লেখা পোস্টগুলি সম্পাদনা করার সোযোগ দেয়া উচিত। কারণ অনেক সময়ই টপিক পোস্ট হওয়ার পরে ভুল চোখে পরে।
পরিচালকদের দৃষ্টি এব্যাপারে আকর্ষণ করছি।
১০০% একমত!
মরুভূমির জলদস্যু, ভাই আমি আপনার সাথে এক মত। এক সময় দেখা যাবে সুপেয় পানি (মিঠা পানি) থাকবে না। কিন্তু কে জানে, তখন হয়তবা মানুষ লোনা পানির জন্য অভিযোজিত হয়ে যাবে। মানুষ তখন লোনা পানি খেতে শুরু করবে।
(উদাহারনঃ আমি যখন বাগেরহাটে ছিলাম, তখন দেখেছি সেখান কার মানুষ যে পানি খায়, তা কিন্তু কিছুটা লোনা(খুবি সামান্য, কিন্তু লোনা), কে জানে তাদের পরবর্তি অথবা তাদের ও পরবর্তি প্রজন্ম হয়তবা সম্পূর্ন রূপে লোনা পানির জন্য অভিযোজিত হয়ে যাতে পারে।)
সব কিছুবি মহান আল্লাহর ইচ্ছা।
সব কিছুই মহান আল্লাহর ইচ্ছা।
আরো একটা বিষয় হতে পারে। লবনাক্ত পানি থেকে সুপেয়ে পানি নিংড়ে নেয়া কব একটা কঠিন নয়। এই বিষয়টি আরো সহজ কোনো সমাধান আসতে পারে।
😀
আসলে এটা নিয়ে আমরা কি বলতে পারি? আমরাই দায়ী এই অবস্থার জন্য। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে ধন্যবাদ।
কোরআনের আলামত , শুরু হচ্ছে কেয়ামত, নামাজ রোজা এবং আল্লাহকে বিশ্বাস আনতে হবে।
দেরিতে বুঝজে কোন লাভ নাই, নামাজ এর দিকে জুকে পড়ুন
সচেতনতার দরকার, ধর্ম এর নিয়ম কানুন জানা দরকার। http://alltimebd.com
দেশের উত্তরাঞ্চলের অবস্থাও খুব খারাপ।এখানে পানির স্তর খুব নিচে।শুকনো মউসুমে এখানে পানির স্তর আরো নিচে চলে যায়।আর পদ্মা শুকিয়ে যাওয়ার ফলে এখানকার আবহাওয়া অনেকটা মরূভুমির মত হয়ে উঠেছে।যেমন গরমের সময় প্রচন্ড গরম আর শীতের সময় প্রচুর শীত।এবং এখানকার আবহাওয়া আরো প্রতকুল হতে চলেছে দিন দিন।আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
দাঁড়ান ভাই ১ গ্লাস পানি পানকরি আগে তারপরে সবটা পড়ব।
🙂
পানি নিয়ে যুদ্ধ;
এরকম কোনো গেম থাকলে যুদ্ধের ধারনা নিতে পারতাম
পোষ্ট টা সুন্দর হইছে