বিশ্বে সেরা বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোতেই শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে কাজ করছেন নারীরা। নারী হিসেবে নয়, বরং যোগ্যতা দিয়ে শীর্ষপদে সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন এসব শীর্ষ কর্তা। এ তালিকাটাও ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। সফল ভাবে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন সফল এ নারীরা। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের এ পথচলা ধীরে ধীরে সফল ভাবে এগিয়ে চলছে। এমন কয়েকজন শীর্ষ নারী যারা প্রযুক্তি দুনিয়ায় শীর্ষে
শেরিল স্যান্ডবার্গ
ফেসবুক
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত শেরিল স্যান্ডবার্গ বর্তমানে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের প্রধান পরিচলন কর্মকর্তা (সিওও)। ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে জন্ম নেওয়া শেরিল এর আগে বিশ্বসেরা সার্চ ইঞ্জিন গুগলের গ্লোবাল অনলাইন সেলস অ্যান্ড অপারেশনসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) করা শেরিল গুগলে কাজ করারও আগে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারির চিফ অব স্টাফ হিসেবে। বর্তমানে বিশ্বসেরা এ সামাজিক যোগাযোগ সাইটের বিক্রয়, বিপণন, ব্যবসায় উন্নয়ন, মানবসম্পদ, যোগাযোগসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তিনিই পরিচালনা করেন।
উরসুলা বার্নস
জেরক্স করপোরেশন
আফ্রিকান-আমেরিকান নারী প্রধান নির্বাহী এবং সফল প্রতিষ্ঠান প্রধান উরসুলা বার্নস। বিশ্বের অন্যতম ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান জেরক্স করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী এবং চেয়ারওমেন হিসেবে ছিলেন বার্নস। ১৯৫৮ সালে জন্ম নেওয়া উরসুলা যন্ত্রকৌশল স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট অব এনইউসি এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে। জেরক্সের সঙ্গে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ শুরু করার পর স্নাতকোত্তর শেষে পুরোপুরি ভাবে যোগ দেন। একেবারে শুরু থেকে যোগ দেওয়ার পর জেরক্সের বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন উরসুলা। ২০০০ সালে এ প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সে সময়ে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে থাকা আরেক নারী প্রধান নির্বাহী অ্যানি মুলচের সঙ্গে একসঙ্গে কাজের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান প্রতিষ্ঠানকে।
মার্গারেট কুসিং উইথম্যান
হিউল্যাট-প্যাকার্ড (এইচপি)
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান হিউল্যাট-প্যাকার্ডের (এইচপি) চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী মার্গারেট কুসিং উইথম্যান। ১৯৫৬ সালে জন্ম নেওয়া উইথম্যানের কাজের ক্ষেত্রটা বেশ সাফল্যময়। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। এইচপির আগে তিনি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন দ্য ওয়ার্ল্ড ডিজনি, ড্রিম ওয়ার্কসসহ বিশ্বসেরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তবে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি ই-কমার্স সাইট ইবে প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিজের কৃতিত্ব দেখান। মাত্র ৩০ জন কর্মী এবং চার মিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান ই-বেকে ১০ বছরে তিনি ১৫ হাজার কর্মী এবং আট বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেন।
ভার্জিনিয়া রোমেট্টি
আইবিএম
শতবর্ষী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইবিএমের প্রথম নারী প্রধান নির্বাহী ভার্জিনিয়া রোমেট্টি। যিনি রোমেট্টি নামেই বেশ পরিচিত। আইবিএমের সর্বোচ্চ নির্বাহী পদে যোগ দেওয়ার আগে রোমেট্টি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৫৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া রোমেট্টির পুরো নাম ভার্জিনিয়া জিনি এম রোমেট্টি। নর্থ ওয়েস্ট্যান ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করা রোমেট্টি আইবিএমে যোগ দেন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।
মেলিন্ডা গেটস
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন
বিশ্বে সেরা ধনকুবের ও বিশ্বখ্যাত সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সহধর্মিণী মেলিন্ডা গেটস। তবে মানবহিতৈষী এবং বিজনেসওম্যান হিসেবেও তিনি বেশ পরিচিত। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালে বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ ২৬ বিলিয়ন ডলার দান করেছে। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করা মেলিন্ডার পুরো নাম মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস। তাঁর বাবা রেমন্ড জোসেফ ফ্রেঞ্চ জুনিয়র ছিলেন প্রকৌশলী এবং মা অ্যালেইন অ্যাগনেস অ্যামারল্যান্ড গৃহিণী। এ দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় মেলিন্ডা সেন্ট মনিটা ক্যাথলিক বিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ডিউক ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ডিউক ফুকুয়া স্কুল অব বিজনেস থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৪ সালে বিল গেটসের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকে মাইক্রোসফটে ক্যারিয়ার শুরু করেন মেলিন্ডা। মাইক্রোসফটের পাবলিশার, মাইক্রোসফট বব, এনকার্টা এবং এক্সপিডিয়া প্রকল্পে কাজ করেছেন তিনি। তিনি মাইক্রোসফট থেকে ইনফরমেশন প্রোডাক্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে অবসর নেন।