যানজটের শহরে গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে প্রায় সময়ই নানা সমস্যায় পড়তে হয়। গাড়ি রাখা বা পার্কিং করা নিয়ে গাড়ি ব্যবহার করছেন এমন সবাই মোটামুটি সমস্যায় পড়েন। জায়গার অভাবই এ ধরনের সমস্যার কারণ। গাড়ির আকৃতির অর্ধেক জায়গার মধ্যে পার্কিং করে ফেলা সম্ভব হলে হয়তো বিপত্তি অনেকটাই কমে আসত। কল্পনা নয়, স্থানাভাব দূর করতে প্রকৌশলীরা এবার বাস্তবেই নিয়ে এসেছেন ভাঁজ করে রাখার উপযোগী নতুন গাড়ি।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রকৌশলীদের তৈরি এই বিশেষ গাড়ি পার্কিংয়ের সময় ভাঁজ হয়ে অর্ধেক জায়গা দখল করবে। স্তন্যপায়ী প্রাণী আর্মাডিলোর শারীরিক গঠন দেখে প্রকৌশলীরা এই গাড়ির নকশা তৈরিতে অনুপ্রাণিত হন। তাই আর্মাডিলোর নামানুসারে গাড়িটির নামও দেওয়া হয়েছে আর্মাডিলো-টি। কোরিয়া অ্যাডভান্স ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকদের তৈরি আর্মাডিলো-টি গাড়ি পুরোপুরি বিদ্যুতে চালিত। গাড়িটির ভেতরে পূর্ণবয়স্ক দুজন যাত্রীর স্থান সংকুলান হয়। ৯৯২ পাউন্ড ওজনের গাড়িটি চলাচলের শক্তি জোগানোর জন্য রয়েছে ১৩ দশমিক ৩৬ কিলোওয়াটের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। আর এ ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় মাত্র ১০ মিনিটেই। একবার পূর্ণ চার্জে গাড়িটি ঘণ্টায় ৩৭ মাইল বেগে ৬২ মাইল পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।
আর্মাডিলো-টির ভেতরে জায়গার অপচয় কমাতে বিশেষ নকশার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। গাড়িতে ব্যবহূত মোটরটির স্থান হয়েছে চাকার মধ্যেই। এতে আরোহীদের আসনের জন্য বাড়তি জায়গা পাওয়া গেছে। আর গাড়ির পাশের সাইড মিররের জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে ক্যামেরা। আর্মাডিলো-টির পেছনের অংশ ভাঁজ হওয়ার সময় গাড়িটির আয়তন অর্ধেকে পরিণত হয়। ১১০ ইঞ্চি লম্বা গাড়িটি ভাঁজ হলে মাত্র ৬৫ ইঞ্চিতে পরিণত হয়। আর্মাডিলো-টির চালক নিজের পছন্দসই পার্কিংয়ের স্থানে গিয়ে গাড়ি থেকে বের হবেন। এরপর স্মার্টফোনের সাহায্যে গাড়িটিকে ‘রূপান্তর’ করবেন। আর ভাঁজ হয়ে যাওয়া গাড়িটি দূরনিয়ন্ত্রণ-প্রক্রিয়ায় পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। গাড়িটির নির্মাতা প্রকৌশলী দলের প্রধান এবং কোরিয়া অ্যাডভান্স ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক ইন সু সুহের মতে, আর্মাডিলো-টি গাড়িটি পর্যটন অঞ্চল বা কোনো ভবনের মধ্যে স্বল্প দূরত্বের ভ্রমণে ব্যবহারের জন্য জন্য আদর্শ হবে।
সূত্র: পপুলার সায়েন্স