বিজ্ঞানী আইনস্টাইন সম্পর্কে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। তিনি তার আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব দিয়ে সারা পৃথিবী বিস্ময়াভূত করেছেন। তার সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য এর আগে আপনাদের পরিবেশন করা হয়েছিল। আজ দেয়া হল এর শেষ পর্ব। এই মহান গণিতজ্ঞের জীবনের অজানা কিছু তথ্য চলুন জেনে নেয়া যাক।
১) আইনস্টাইন তার স্ত্রীকে নোবেল পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেনঃ
মিলেভা মারিচের সাথে আইনস্টাইনের সম্পর্কের কানাঘুষা শুরু হলে ১৯১০ সালের প্রথমদিকে আইনস্টাইন তার পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যান। জার্মানীর বার্লিনে তিনি বসবাস শুরু করেন। সেখানে তার কাজিন এলসার সাথে নতুন সম্পর্কের সূচনা করেন। ১৯১৯ সালে মারিচের সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদের শর্তানুসারে আইনস্টাইন তাকে আশ্বাস দেন যে, তার বাৎসরিক আয়ের অংশ তিনি এলসাকে দেবেন এবং নোবেল পুরস্কারের অর্থ হতে যে টাকা পাবেন তা তিনি দিয়ে দেবেন। আইনস্টাইন নিশ্চিত ছিলেন যে সে বছর নোবেল পুরস্কার তিনিই জিততে চলেছেন। মারিচ এই প্রস্তাবে সম্মতি জানায়। আইনস্টাইন আলোকতড়িৎ ক্রিয়ার ওপর নোবেল পুরস্কার পান ১৯২২ সালে। এরপর তিনি মারিচকে তার পুরস্কারের অর্থ প্রদান করেন শর্তানুযায়ী। কিন্তু ততদিনে তিনি এলসার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। ১৯৩৬ সালে এলসার মৃত্যু হয়। তার আগ পর্যন্ত তিনি আইনস্টাইনের স্ত্রী হয়েই ছিলেন।

২) আইনস্টাইনের পেছনে ছিল এফ বি আইয়ের গোয়েন্দারাঃ
১৯৩৩ সালের হিটলার ক্ষমতায় আসার পরপরই আইনস্টাইন বার্লিন ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে পাড়ি জমান এবং সেখানকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো শুরু করেন। প্যাসিফিস্টদের প্রতি তার সমর্থন, নাগরিক অধিকার সম্পর্কে যারা আন্দোলন করছে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো এবং বামপন্থীদের সাথে ওঠাবসা, এসব কিছুই জে এডগার হুভারের মনে সন্দেহ জাগানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। তাই আইনস্টাইন যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখবার সাথে সাথেই তার পেছনে এফ বি আই গোয়েন্দা সংস্থা পিছু নেয়। তারা যা করে তা হচ্ছে, তাকে মোটামুটি ২২ বছরের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাঝে নিয়ে আসে। তার সমস্ত ফোন কলে আড়ি পাতা হয়, তাকে পাঠানো সমস্ত ই-মেইল চেক করা হয় এবং ট্র্যাশ বক্সে কি কি জমা করে রেখেছেন তা পর্যন্ত দেখা হয়। তাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের একজন স্পাই বলে ধারণা করা হয়েছিল। তারা এমনকি এও ধারণা করে রেখেছিল যে আইনস্টাইন হয়ত মারণ রশ্মি তৈরি করছে। ১৯৫৫ সালে আইনস্টাইনের মৃত্যুর পর তাদের সকল তদন্ত ও খোঁজ খবর রাখার কাজ শেষ হয়ে যায়।
৩) তাকে ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট হবার আমন্ত্রণও জানানো হয়ঃ
যদিও আইনস্টাইন তেমন ধার্মিক ছিলেন না, তবুও আইনস্টাইন তার ইহুদী ঐতিহ্যের সাথে এক ধরণের প্রবল টান অনুভব করতেন এবং প্রায়ই বিরুদ্ধ আচরণকারী সেমিটিজমের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। তিনি কট্টর জিওনিস্ট ছিলেন না কিন্তু ১৯৫২ সালে ওয়াইজম্যানের মৃত্যুর পর তাকে ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট হবার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।