ভিজিটর হচ্ছে একটি ব্লগের হার্ট। শুধুমাত্র ভাল মানের আর্টিকেল থাকলেই হবে না, প্রচুর পরিমানে টার্গেটেড ট্রাফিক সাইটে ড্রাইভ করাতে না পারলে আপনার সব প্রচেষ্টাই বৃথা। অনেকে ব্লগে ট্রাফিক ড্রাইভের জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের উপর জোর দেয় তবে এটা কিছুটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। জেনে অবাক হবেন আপনার ব্লগের ফেসবুক ফ্যান পেইজটাকে ব্যবহার করেও খুব দ্রুত টার্গেটেড ট্রাফিক ড্রাইভ করানো সম্ভব। বর্তমানে অনেক নামিদামি কোম্পানির ওয়েবসাইটগুলো ট্রাফিক ড্রাইভের জন্য ফেসবুক মার্কেটিং এর উপর জোর দিয়েছে। ব্যাপারগুলো আহামরিক কঠিন নয় তবে ক্রিয়েটিভলি আমি যে ট্রিকসগুলো শেয়ার করবো সেগুলো ফলো করতে হবে। কথা আর না বাড়িয়ে চলুন জেনে কি সেই ট্রিকসগুলো –

১। ইমেজ পোস্টঃ প্রথমত আসি ফেসবুক পেইজের ইমেজ পোস্ট নিয়ে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ফেসবুক পেইজে ইমেজ টাইপ পোস্ট করলে ১২০% বেশি এঙ্গেইজমেন্ট হয়। তাই চেষ্টা করুন আপনার ব্লগের আর্টিকেলের সাথে মিলিয়ে বড় সাইজের প্রাসঙ্গিক ইমেজ দিতে। আর অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ইমেজ কোয়ালিটি যাতে ভাল মানের হয়।

ফেসবুকে বড় সাইজের ইমেজ পোস্ট করার ক্ষেত্রে এভাবে সরাসরি ইমেজ আপলোড করুন –

adguard_tablet_1
এটা হচ্ছে AndroPps এর একটি পোস্টের উদাহরন যেখানে দেখা যাচ্ছে তারা পোস্টে বড় সাইজের ইমেজ ব্যবহার করেছে যা তাদের পোস্টটাকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলেছে –

11143463_416316548573734_829433152314962144_n

২। পোস্ট ডেসক্রিপশনঃ আপনি যে আর্টিকেলটি পেইজে প্রমোট করবেন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন পেইজের পোস্টে ডেসক্রিপশনটা যাতে বেশি বড় না হয়। অনেকে পোস্টের ডেস্ক্রিপশন এতো বড় দেয় যে ফ্যানরা প্রথম দেখাতেই বোরিং ফিল করে। যার কারনে পোস্টে এঙ্গেইজমেন্ট হয় না। পোস্টের ছোট ডেসক্রিপশন পেইজের এঙ্গেইজমেন্ট বাড়ায়। সেই সাথে ক্লিক থ্রো রেট বাড়িয়ে দেয়। তবে পোস্টের ডেসক্রিপশন লিখার ক্ষেত্রে টুইটারের ১৪০ ক্যারেক্টার ফরমেটটা ফলো করলে ভাল কাজে দিবে।

চিত্রে Biggan Projukti এর পোস্টটি দেখলে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে –

11143463_416316548573734_829433152314962144_n

ডেস্ক্রিপশন লিখার ক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় খেয়াল করবেন সেটা হল ডেসক্রিপশনটা যাতে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটাকে সরাসরি প্রমোট না করে। পোস্টের ডেসক্রিপশনটা ফ্যানদের নিকট ইনফরমেটিভ এবং ভ্যালুবল না হলে তারা এটাকে কমার্শিয়াল মনে করে এঙ্গেইজ করা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে। সুতরাং পোস্টের ডেসক্রিপশনটা ক্রিয়েটিভভাবে লিখুন যাতে ফ্যানদের এঙ্গেইজমেন্টটা বাড়ে সেই সাথে ক্লিক থ্রো রেট।

আরেকটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছি সেটা হল ইমেজ টাইপ পোস্টের ডেসক্রিপশনে আর্টিকেলের যে লিঙ্কটা শেয়ার করবেন তা যেন অবশ্যই ক্লিন এবং ছোট থাকে। লিঙ্ক ছোট করার জন্য এক্ষেত্রে আপনি bit.ly ব্যবহার করতে পারেন। লিঙ্ক দেওয়ার ক্ষেত্রে আবার একাধিক লিঙ্ক দিয়ে একাধিক কল টু অ্যাকশন করতে যাবেন না তাহলে আপনার ফ্যানরা বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। যা আপনার পোস্টের ক্লিক থ্রো রেট কমিয়ে দিবে।

AndroPps এর পোস্টটি একটি চমৎকার উদাহরন এক্ষেত্রে –

11143463_416316548573734_829433152314962144_n

৩। কোয়েশ্চেন টাইপ পোস্টঃ পোস্টের ডেস্ক্রিপশনটা যদি কোয়েশ্চেন টাইপ হয় তবে সেটা ফ্যানদেরকে বেশি এঙ্গেইজ করে সেই সাথে বাড়িয়ে দেয় ক্লিক থ্রো রেট। তবে খেয়াল রাখবেন কোয়েশ্চেনটা যেন ছোট এবং আর্টিকেলের সাথে প্রাসঙ্গিক হয় নিম্মের মতো –

adguard_tablet_1

৪। উক্তিঃ ব্লগের আর্টিকেলের কোন বিশেষ উক্তি পিক করে সেটা পোস্টের ডেসক্রিপশনে দিয়ে যার উক্তি তার ছবি পোস্টের সাথে এটাচ করে করেও আপনি ব্লগের আর্টিকেলের ক্লিক থ্রো রেট বাড়াতে পারেন। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি উক্তি সম্বলিত পোস্টগুলো ফেসবুকে সবার কাছে এতো গ্রহনযোগ্যতা পায় যে পোস্টটি বেশি ভাইরাল হয়ে পেইজের এঙ্গেইজমেন্ট কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।

চিত্রে Mashable এর পোস্টটি খেয়াল করলে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে –

adguard_tablet_1

নীচের চিত্রে খেয়াল করলে এটা আরো ক্লিয়ার হয়ে যাবে এ ধরনের পোস্ট ফেসবুকে কেমন ভাইরাল এবং এঙ্গেইজ হয় –

Capture

৫। লিঙ্ক প্রিভিউঃ যদি আপনি পোস্টে ইমেজ ব্যবহার না করেন তবে টেক্সটের সাথে লিঙ্ক প্রিভিউটা ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার পোস্টটি ক্লিকেবল করে তুলবে আপনার পেইজের ফ্যানদের নিকট। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন লিঙ্ক প্রিভিউটি দেখানোর পর পোস্টের টেক্স থেকে লিঙ্কটা মুছে দিবেন নতুবা ক্লিন লাগবে না পোস্টটি।

যেমন এই স্টেপগুলো ফলো করে –

ধাপঃ১

1

ধাপঃ২

2

ধাপঃ৩

3

৬। লাইফ স্টাইল/টিপসঃ সর্বদা আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস রিলেটেড পোস্ট করলে পেইজের ফ্যানরা বোরিং হয়। তাই লাইফ স্টাইল অথবা টিপস রিলেটেড আর্টিকেল যখনই লিখবেন সেটি আপনার ফেসবুক পেইজে শেয়ার করুন।

11143463_416316548573734_829433152314962144_n

৭। ব্লগ কন্টেস্টঃ মাঝে মাঝে ব্লগে কন্টেস্টের আয়োজন করে সেটি ফেসবুক ফ্যান পেইজে প্রমোট করেও ট্রাফিক ড্রাইভ করাতে পারেন। কারন আপনি যখন কন্টেস্টটি ফেসবুকে প্রমোট করবেন তখন আপনার পেইজের ফ্যানরা এতে এঙ্গেইজমেন্ট করতে চাইবে সেক্ষেত্রে ব্লগের কন্টেস্টে এঙ্গেইজমেন্টের পাশাপাশি টোটাল ব্লগে ট্রাফিক ড্রাইভ করাতে পারছেন।

adguard_tablet_1

৮। সপ্তাহের সেরা আর্টিকেলগুলো নিয়ে পোস্টঃ সপ্তাহের কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আপনার ব্লগের সপ্তাহের বেস্ট আর্টিকেলগুলো নিয়ে পেইজে পোস্ট করতে পারেন। এতে আপনার পেইজের ফ্যানরা এক পলক আর্টিকেলগুলো দেখার সুযোগ পাচ্ছে এবং পাশাপাশি এ ধরনের অপশনের কারনে নির্দিষ্ট আর্টিকেলে ফ্যানদের ক্লিক থ্রো রেট বাড়িয়ে দিচ্ছে।

৯। শর্ট ভিডিওঃ মাঝে মাঝে পেইজে আপনার ব্লগ আর্টিকেলের বিষয়বস্তু নিয়ে একটা শর্ট ভিডিও সংযুক্ত করে পোস্ট করুন। কারন ভিডিও টাইপের পোস্টগুলো পেইজের ফ্যানদের বেশি এঙ্গেইজ করে। আর ভিডিওটি এমন হওয়া দরকার যাতে ওই ভিডিও থেকে ফ্যানরা নির্দিষ্ট আর্টিকেলের ব্যাপারে ভালভাবে জানতে পারে যাতে তাদের জানার তৃষ্ণাটা আরো বেড়ে যায় এবং আর্টিকেলের লিঙ্কে ক্লিক করে বাকিটুকু জানতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

adguard_tablet_1

১০। ফেসবুক পেইড এডভার্টাইজমেন্টঃ আপনার ফেসবুক ফ্যান পেইজের পোস্ট ফেসবুক পেইড এডভার্টাইজমেন্ট করিয়েও ব্লগের জন্য কাঙ্খিত ট্রাফিক ড্রাইভ করাতে পারেন। ফেসবুক পেইড ক্যাম্পেইনের দুটো সুবিধা আছে- একটি হল আপনার ফ্যান পেইজের টোটাল ফ্যানদের নিকট পোস্টটি রিচ করাতে পারছেন। দ্বিতীয়ত পেইজের অলরেডি ফ্যান যারা আছে তাদের বাইরেও আপনার ব্লগটি যে ধরনের ইন্ড্রাস্টি নিয়ে লেখালেখি করে সেই ইন্ড্রাস্টির প্রতি ইন্টারেস্টেড রিডার আপনি পেইড কাম্পেইন করে পাচ্ছেন।

সুতরাং উপরের এই ১০ টি ট্রিকস আপনি যদি ক্রিয়েটিভলি ফলো করতে পারেন, দেখবেন আগের থেকে আপনার ব্লগ সাইটে কয়েকগুন হারে ট্রাফিক বেড়ে গিয়েছে। আমি এই ১০টি ট্রিকস শেয়ার করলাম তবে এর বাইরেও কারো যদি কোন ট্রিকস জানা থাকে অবশ্যই কমেন্টে শেয়ার করবেন এতে সবাই উপকৃত হবে। আর লেখার কোন পয়েন্ট না বুঝে থাকলে কমেন্ট করুন অথবা চাইলে সরাসরি আমার সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করুন। আমার ফেসবুক প্রোফাইল – https://www.facebook.com/alauddin.almahdi15

পরিশেষে ধন্যবাদ সবাইকে অনেকক্ষন ধরে লেখাটি পড়ার জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here