আপনার ব্লগটির জন্য আপনার শ্রম, সাধনা এবং অর্থ বিনিয়োগ করার পরেও তা থেকে কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছেন না, যতুটুকু আপনি আশা করছেন, তাই না? নেট তন্নতন্ন করে প্রোব্লগারদের ব্লগ পড়ছেন এবং তাদের বলা মতো কাজে লাগাচ্ছেন কিন্তু তার পরেও ফলাফল শুণ্য এর ঘরে। তার মানে বুঝতে হবে আপনি আপনার জ্ঞানকে ঠিকমত প্রয়োগ করতে পারছেন না। আর এটাই প্রফেশনাল ব্লগার হবার পথের প্রধান অন্ত্যরায়।
একজন প্রফেশনাল ব্লগার কখনই এই চিন্তা করবে না যে, সে হঠাৎ করেই বড়লোক হয়ে যাবে। আমরা বলতে পারি যে এরকম চিন্তা করবে তার ব্লগিং পেশাতে গুড়েবালি ছাড়া আর কিছুই জুটবে না। কিন্তু হ্যা এখানে ভাববার বিষয় যে, আপনি যদি একটি সফল এবং চলমান আয় করা যাবে এমন ব্লগ তৈরী করতে পারেন তবে আপনাকে অর্থ উপার্জন থেকে কেউ বাধা দিতে পারবেনা। এখন দেখুন তো আপনি প্রফেশনাল ব্লগার হতে চাচ্ছেন, ব্লগ থেকে আয় করতে চাচ্ছেন কিন্তু আপনি কি পুরোপরি তৈরী প্রফেশনালদের মত? যদি না হয়ে থাকেন তো হাত-পা ঝেড়ে পিসি’র সামনে বসুন এর এক নিশ্বাসে দু্ই পর্বের ধারাবাহিক পোষ্টের আজকের প্রথম পর্বটি পড়ুন। হয়তো কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারবেন আপনি কতটুকু তৈরী একজন প্রফেশনাল ব্লগার হিসাবে।
১. শিক্ষা গ্রহনের মানুসিকতা: বর্তমান দ্রুত চলমান বিশ্বে প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষার মান যেখানে সদা পরিবর্তশীল সময়ের সাথে সাথে, সেখানে একজন প্রফেশনাল ব্লগারকেও তার ব্লগিং এর বিষয়কেও দ্রূত পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখতে হবে। আর এর জন্য তাকে প্রতিনিয়তই শেখার মাঝে থাকতে হবে। হতে পারে আপনি কোন নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়া লিখতেই পারেন না। তাহলে আজই নতুন করে শিখতে বসে পড়ুন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রায় প্রতিটি বিষয়েই জানতে চেষ্টা করুন। ব্লগিং এ একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনি টেকনোলজিক্যাল প্লাটফর্ম এ কাজ করছেন এখানে গত বছর যে সাইটি প্রথম ছিল তা এই বছর হয়তো নাই। আর এর বিপরীত টাও হতে পারে। ঠিক এটা একজন ব্যক্তি ব্লগারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আমার এই ছোট ব্লগিং ক্যারিয়ারে দেশের এবং দেশের বাহিরের কিছু গ্রেট ব্লগাদের সাথে কথা বলে জানতে পাছি যে তারা কতটা সময় শেখার পিছনে ব্যয় করেন। তারা বিভিন্ন ব্লগারদের সাথে অনলাইন কনফরেন্স করেন, ব্লগিং ই-বুক পড়েন, এবং ই-কোর্স করেন। এবং এর থেকেই তারা তাদের উন্নতিকে দুই দিক থেকেই দেখতে পারেন নিজেদের মধ্যেই, ১. ভাল লিখতে পারছেন কিনা; ২. সুনিপূন ভাবে শিখতে পাচ্ছেন কিনা।
আমার পছন্দের তালিকার সেরা ৩টি ইংরেজী ব্লগ যেখানে আপনি যেকোন বিষয় নিয়ে টপিক পারেন। কিছু্ক্ষন হলেও ঘুরে আসুন একবার করে।
১. প্রোব্লগার
২. ডেইলি ব্লগ টিপস
৩. কপিব্লগার
২. ব্যয় করার মানুসিকতা: ব্লগিং করবেন বলে মনস্থ করলেন অথচ এর জন্য কোন ব্যয় করতে চাইবেন না তাহলে আপনাকে দিয়ে ব্লগিং করা হবে না। ব্লগিং এমন একটি জায়গা যেখানে প্রতিটি পরতে পরতে আপনাকে অর্থ ব্যয় করতে হবে যদি আপনি সত্যিকার অর্থেই ব্লগিং করে অর্থ আয় করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন। প্রথমে হয়তো আপনি ব্লগ থেকে কোন লাভ আশা করতে পারবেন না তবে ব্লগকে সাজিয়ে তুলতে, টপ ক্লাস ডোমেইন নাম, ভাল সার্ভারে হোস্টিং এবং আনুসাংগিক খরচ আপনাকে করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে যদি আপনি কয়েকজন মিলে প্রফেশনালি ব্লগিং শুরু করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তবে ব্যক্তিগত ব্যয় কিছুটা হলেও কমে আসবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ব্লগে লিখার জন্য সময় ব্যায় করার ক্ষেত্রেও ধ্যান দিতে হবে। এবং আপনাকে অবশ্যই প্রত্যেহ লেখা চালিয়ে যাওয়ার মত ধৈর্য্য থাকতে হবে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কি পারবেন, দিনের পর দিন মাসের পর মাস এভাবে লিখা চালিয়ে যেতে? অত্যান্ত দু:খের হলেও সত্য যে, অনেক প্রোব্লগাররা শুধু তাদের সময় নিষ্ট হয়ে না উঠার কারনে ব্লগিং কে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়েছেন।
আচ্ছা এখন দেখুন, ব্লগকে চালু করার কয়েক মাস পরেও যদি দেখেন যে আপনার ব্লগটি লোকসান এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তবে কোন পাবলিশার এ্যাড স্থাপন করুন ব্লগ কন্টেটেনর পাশাপাশি। তার মানে এই নয় যে সে এ্যাড প্রদর্শন করাবেন। উদাহরন স্বরুপ, এ্যাডসেন্স, ক্লিকসোর, ইনফোলিংকস এর এ্যাড বসাতে পারেন। অর্থ আয়ের আরো একটি মাধ্যম হিসাবে ডোনেশর বাটন লাগাতে পারেন। কেউ ডোনেট করলে সেটিও আপনার আয়ের উৎস হবে। আয়ের উপাদান হিসাবে আরো যুক্ত করতে পারেন, আপনার লিখা ভাল মানের ই-বুক, ভিডিও টিউটোরিয়াল যা অর্থ দানের কিনিময়ে ক্রয় করতে হবে।
৩. একাগ্রতা: প্রতিনিয়ত মানের লিখা পড়তে কে না ভালবাসে, আমি নিজেও ভালবাসি। তবে মনে করুন, আপনি একজন ভাল মানের ব্লগার, অনলাইন এবং অফলাইনে অনেক ভক্ত আছে আপনার। এখন সমস্যা হচ্ছে কোন না কোন কারনে আপনি বেশ কিছুদিন ধরে লিখালিখি করছেন না। এবার বুঝুন ভক্ত সৃষ্টি হরে কি হয়। একর পর এক মেইল। এক্ষেতে প্রফেশনাল ব্লগাররা যদি অন্যের ব্লগে পেইড রাইটার হিসাবে লিখেন তবে, এডমিন থেকেও কিছুটা চাপ আসবেই। এটাই স্বাভাবিক, কারন আপনি অর্থের বিনিময়ে লিখছেন তাই প্রফেশনালিজম কে সামনে রেখেই কাজ চালাতে হবে। তাই প্রফেশনাল ব্লগারদের কে অবশ্যই নিয়মিত সপ্তাহে অন্ত্যত ২টি পোষ্ট করাটা শোভনীয়। নিয়মিত পোষ্ট করলে আপনি নিজেও নিজের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারবেন এবং এবং তাতে আপনার ব্লগিং এর প্রতি সিরিয়াসনেস বৃদ্ধি পাবে। এত ভিজিটর এবং আপনার ভক্তরা প্রত্যেহ আপনার ব্লগে আসবে, নতুন লিখা পড়বে।
এর জন্য যা করনীয় :
প্রফেশনলান ব্লগিং এ লেখালেখি জন্য একটি সময় নির্ধারন করুন। কারন আপনি হয়তো আজ ফ্রি আছেন কাল বা পরশু না্-ও থাকতে পারেন। তাই আপনার ব্যস্ত সময়ের আগেই কিছু পোষ্ট লিখে ড্রাফট করে রাখুন। এটি ব্লগিং এর ভাষায় বলতে গেলে “পোষ্ট ব্যাংক” হিসাবে কাজ করবে। আপনার ব্যস্ত সময়ে শুধু ড্যাসবোর্ডে লগইন করবেন আর পাবলিশ করবেন। এতে আপনার সময়ের অপচয় হবে না।
আজ এই পর্যন্ত। শীঘ্রই আসছি পরবর্তী পোষ্ট নিয়ে। ততক্ষনে নিজেকে উপরের তিনটি অভ্যাসের সাথে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করুন।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 🙂
অনেক ভালো হইছে, চালিয়ে যাও… 🙂
আজ অনেক দিন পর আমিও একটা পোস্ট দিলাম বিপিতে…
হুম আপনাকে ধৈন্যা 🙂
আমি তো হতে পারলাম না। 🙁 যারা প্রফেশনাল ব্লগার হতে আগ্রহী তাদের জন্য নিশ্চিত কাজে দেবে। 🙂
আরে কি কয়? 😛
প্রফেশানালরা এমনেই কয় 😛
😉
সুন্দর লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ..
http://technoeverywhere.blogspot.com/
মন্ত্রব্যের জন্য আপনাকেও দৈন্যা 🙂
৫ এ ৫ 🙂
অনেক গুচিয়ে হয়েছে পোষ্টটা 🙂
সুন্দর লিখা। চালিয়ে যান……………
পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম।
শুধু শিখলেই হবে? কাজেও লাগান। 🙂