নিঃসন্দেহে এটা বলা যায় যে বর্তমান যুগ হচ্ছে বিজ্ঞানের যুগ, প্রযুক্তির যুগ। এই অগ্রযাত্রায় মানুষ দিন দিন যেভাবে উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করছে তা বলাই বাহুল্য।এছাড়া পড়াশোনার ক্ষেত্রে যদি তাকাই, মানুষ বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়কেই প্রাধান্য দিচ্ছে। কেননা, এখনকার যুগে বিজ্ঞান শিক্ষা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই যুগের সাথে তাল মেলাবার জন্য।
বিশ্বের সেরা তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কিছু বলা হল আজ, যেগুলো কম্পিউটার বিজ্ঞান অধ্যয়নের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত।
১) ETH Zurich- সুইস ফেডারেল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি জুরিখ
জুরিখের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার উন্নয়ন ও কম্পিউটারের নানা বিষয় নকশা করা নিয়ে বেশ সুনাম রয়েছে। এরই পরিক্রমায় ১৯৮১ সালে এই প্রজেক্টগুলোর উন্নয়ন সাধন করবার জন্য নিবেদিতপ্রাণ একটি কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের সূচনা করা হয়।
বর্তমানে এই বিভাগে ৩০জনেরও বেশি অধ্যাপক আছেন যারা ১০টিরও বেশি দেশ থেকে এসেছেন।গবেষণায় নিয়োজিত প্রায় ২০০ ছাত্র ছাত্রী এখানে অধ্যয়ন করছে এবং ৫০ জনেরও বেশি প্রবীণ গবেষক রয়েছেন।এই বিভাগে কম্পিউটার বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিষয়ক ইন্টেলিজেন্স অধ্যয়ন, নানা ধরণের প্রোগ্রামিং ভাষা ও সফটওয়্যার প্রকৌশলী বিদ্যা শেখানো হয়ে থাকে।
আই বি এম, মাইক্রোসফট, গুগল, ডিজনী ছাড়াও আরো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিষয়ক ও কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ বিষয়ক সম্পর্ক রয়েছে।
২) ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (ক্যালটেক)
ক্যালিফোর্নিয়ার পাজাডেনায় অবস্থিত ছোট্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বিশ্বমানের কম্পিউটার বিদ্যা ও গণিত বিভাগ। প্রতি বছর এখান থেকে বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অগ্রপথিকেরা গ্রাজুয়েশন সমাপ্ত করে বের হন।
ক্যালটেকে নারীদের জন্য সবচাইতে পছন্দের বিভাগ হল কম্পিউটার বিজ্ঞান। ৯৫ শতাংশ আন্ডারগ্রাজুয়েটদের অন্তত একটি কোর্স থাকে কমন। সেটি হচ্ছে এই কম্পিউটার বিজ্ঞান। এখানকার আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম বেশ শিথিল। অনেক ছাত্রছাত্রীই দুটি বিষয়ে ডাবল মেজর করে থাকে। একটি হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং আরেকটি পছন্দসই বিষয় কিংবা কম্পিউটার বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে নেয়া অপর একটি বিষয়।
মজার ব্যপার হচ্ছে মাত্র তিনজন ছাত্রছাত্রী হচ্ছে এখানকার ফ্যাকাল্টির সদস্য যা বিশ্বের অন্যতম অগ্রসরমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা।
এই বিভাগের অন্যতম একটি প্রাপ্তি হচ্ছে ‘টাচস্টোন ডেলটা’ নামে একটি সুপারকম্পিউটার নির্মাণ।
৩) ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিঃ
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ বেশ আস্থার সাথে বলতে পারে, “আমাদের ছাত্রছাত্রীরা বিশ্বকে পরিবর্তন করে”। তাদের এলামনাইদের নাম দেখলেই ব্যপারটার সত্যতা যাচাই করতে পারবেন। তাদের এমন কিছু সদস্য রয়েছে যারা আদতেই পুরো পৃথিবীটাকে পরিবর্তন করছে।
বর্তমানে তাদের ছাত্র ছাত্রীরা সান ফ্রান্সিস্কোতে তাদের হাতেখড়ি শুরু করছে যেখানে নানা ধরণের সমস্যা প্রজেক্ট হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে। যেমন নবায়নযোগ্য শক্তির অর্থনৈতিক নানা ধরণের ঝামেলা নিয়ে কাজ করা আরো উন্নত ধরণের হিসাব ব্যবস্থার উন্নয়ন করা ইত্যাদি।
কম্পিউটার বিজ্ঞানের নানা ধরণের ব্যবহারিক সমস্যা ও থিওরী সম্পর্কে জানা- এই দুটো বিষয়েই ছাত্র ছাত্রীরা তাদের মনোনিবেশ করতে পারে এই বিভাগে নাম লিখিয়ে। কম্পিউটার বিজ্ঞান কিংবা কম্পিউটার বিজ্ঞান ও অণুজীব বিদ্যা- এই দুই বিষয়েই ছাত্র ছাত্রীরা এখানে তাদের মেজর করতে পারে।
এখানকার স্নাতকরা নানা ধরণের ভিডিও গেম ডিজাইন, সুপারকম্পিউটার তৈরি, রবোটিক্স নিয়ে গবেষণা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে। এছাড়াও তারা গুগল ও মাইক্রোসফটের মত বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দাপটের সাথে তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছে।
সূত্রঃ Times Higher Education