একজন মানুষের প্রকৃত সৌন্দর্য প্রকাশ পায় তার চেহারায় নয়, বরং তার আচার আচরণ, ব্যক্তিত্ব, প্রবাহমান জীবনধারা, চিন্তা চেতনা আর প্রতিদিনের কর্মকান্ডের মাধ্যমে। আর এই সৌন্দর্যকে বিকশিত করে অর্জিত শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা। এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ যেমন একে অপরের থেকে আলাদা ঠিক তেমনি প্রতিটা মানুষের সৌন্দর্যও আলাদা। আপনি যদি কৌতুহলী চোঁখে ১০ জন মানুষের বৈশিষ্ট্যর মাঝে সৌন্দর্য খোঁজার চেষ্টা করেন হয়তবা এমন অনেক বৈচিত্র খুঁজে পাবেন যা স্বাভাবিক চোঁখে সচরাচর ধরা পরে না।
একজন ব্লগারের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে তার লেখার মাধ্যমে। লেখায় যেমন তার চিন্তা চেতনা, প্রত্যাহিক জীবনধারা, কর্মকান্ড, অভিজ্ঞতা ফুটে ওঠে পাশাপাশি তার আচার আচরণ, রুচিবোধ, মানষিকতা এবং ব্যক্তিত্বও প্রস্ফুটিত হয়। তাই একজন ব্লগারের জন্য লেখার বিষয়বস্তু, উৎস, উপস্থাপনার ধরণ, লেখার প্রকৃতি, পাঠক সম্পর্কে ধারণা ইত্যাদি অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
লেখার বিষয়বস্তু
একটা সুন্দর লেখা ব্লগের মাধমে সকলকে উপহার দেয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে লেখার বিষয়বস্তু। যেনতেন বিষয় লিখে হয়তবা ব্লগের পৃষ্ঠা সংখা বৃদ্ধি করা যেতে পারে কিন্তু নিজেকে একজন আদর্শ ব্লগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। একটা প্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগে আপনি লেখার বিষয়বস্তু হিসেবে নিশ্চয় রূপকথার রাক্ষসপুরীর গল্প নির্বাচন করতে পারেন না। এক্ষেত্রে ভিজিটরদের বিব্রত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেকেই অনেক সময় ব্লগের মাধ্যমে পাইরেটেড সফটওয়্যার, ক্রাক কিজেন ইত্যাদি বিষয়ে লিখে থাকেন, এ ধরণের লেখার মধ্যে কোন সৃজনশীলতা নেই। তাই এ ধরণের লেখার মধ্যে দিয়ে একজন ব্লগারের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে ওঠে না। এর বিপরীতে আপনি এক বা একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে কোন সৃজনশীল প্রজেক্ট সম্পর্কে লেখতে পারেন।
লেখার বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে যা অনুসরণীয়
- ওয়েব সাইটের ধরণ, বিভাগ এবং কার্যক্রম ।
- চলমান ঘটনাবলীর উপর নিজস্ব মতামত ।
- নির্বাচিত বিষয়ে নিজের দক্ষতা এবং সৃজনশীলতা।
- বাস্তব অভিজ্ঞতা
লেখার সঠিক উৎস
সঠিক উৎস নির্বাচন করার বিষয়টিও একজন ব্লগরারের জন্য অতিব গুরুত্বপূর্ণ। ব্লগিং এ দুইটা শব্দ প্রায় সবারই পরিচিত সেটা হল Copy Past, অনেকেই বিভিন্ন ব্লগে পূর্বে প্রকাশিত অন্যকারো লেখা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে হুবুহু তুলে ধরেন। এই বিষয়টি একজন ব্লগারের সৌন্দর্য এবং ভাবমুর্তি দারুনভাবে নষ্ট করে। প্রায়ই প্রতিষ্ঠিত ব্লগ গুলোতে ব্লগারদের মধ্যে এ বিষয়ে বাক-বিতন্ডা দেখা যায়। এটাও এক ধরণের পাইরেসি। একজন কবির কাছে যেমন তার লেখা কবিতা গুলো সম্পদ, ঠিক তেমনিভাবে একজন ব্লগারের কাছে তার লেখাগুলোও সম্পদ। অনেকেই একমাত্র Copy Past এর কারণে ব্লগিং থেকে বিদায় নিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু আমরাই হচ্ছি।
লেখার সঠিক উৎস নির্বাচনে যা অনুসরণীয়
- দৈনন্দিন বাস্তব এবং বিজ্ঞান জগতে ঘটে চলা আলোচিত ঘটনা প্রবাহ ।
- প্রতিষ্ঠিত লেখকের লেখার অনুবাদ।
- কোন বিষয়ে সম্পূর্ণ সতন্ত্র এবং নিজস্ব চিন্তা চেতনা এবং মতামত।
- নিজের গবেষণার ফলাফল।
- অর্জিত শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা।
- ভ্রমণ এবং পরিদর্শন।
- বিভিন্ন বই, ম্যগাজিন. পত্র-পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত ধারণা।
- আমাদের জীবনধারা ।
কোন লেখা অনুবাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে অনুবাদ করার চেয়ে ঐ লেখাটির বিষয়বস্তু ভালভাবে আয়ত্ব করে নিজের মত করে লেখার মধ্যে সার্থকতা অনেক বেশি থাকে। এক্ষেত্রে একজন লেখক সৃজনশীলতা প্রকাশের মাধ্যমে নিজের সৌন্দর্যকে বিকশিত করার সুযোগ পায়। উৎস যাই হোক না কেন লেখাটির মধ্যে যেন লেখকের সতন্ত্রতা বৈশিষ্টটি বজায় থাকে, আর এটাই একজন ব্লগারের সৌন্দর্য পরিমাপের অন্যতম নিয়ামক।