সময়ের সাথে সাথে মানুষ অনেক কিছুই ভুলে যায়। বিস্মৃত হয়ে যায় আলো ঝলমলে স্মৃতির দিনগুলো। একেকটি জনপদ, একেকটি সভ্যতা নিমেশেই বিলীন হয়ে যায় অতল গহ্বরে। যেমনটি ধরা যায় প্রাচীন পম্পেই নগরীর ক্ষেত্রে। হতভাগ্য মানুষগুলোর ওপর নেমে এসেছিল প্রকৃতির অভিশাপ। তবে শুধু পম্পেই নয়, হারানো বেশ কিছু শহরের নাম আমাদের জানা নেই। কেন, কি কারণে এরা পৃথিবীর বুকে সগৌরবে টিকে থাকতে পারে নি কিংবা কেন মানুষ এদের নাম জানে না, তা নিয়েই আমাদের সিরিজ আয়োজনের আজ দেয়া হল প্রথম পর্বঃ
১) কার্থেজঃ

ছবি সূত্রঃ গুগল
বর্তমানের তিউনিসিয়ায় এই শহরটির অবস্থান ছিল। কার্থেজ নির্মিত হয়েছিল ফিনিশীয় ঔপনিবেশিকদের দ্বারা এবং মধ্যযুগে এটি অন্যতম একটি সেরা শক্তিতে পরিণত হয়।এই অঞ্চলের অবস্থান দখল করবার জন্য রোম ও সিরাকিউজদের মধ্যে বেশ কয়েকটি রক্তক্ষয়ী সংঘাত অনুষ্ঠিত হয়। এদের মধ্যে ইতালির হানিবালের মাধ্যমে যে অন্তর্ঘাতটি সংঘটিত হয়, তা বেশ উল্লেখযোগ্য। যীশুর জন্মের ১৪৬ বছর আগে রোমানরা এই শহরটি ধ্বংস করে দেয়। রোমানরা প্রতি বাড়ি গিয়ে গিয়ে হামলা চালায় ও লুটপাট করে। খুন, ধর্ষণ, দাসত্বে পরিণত- ইত্যাদি নানা জঘন্য কাজ তাড়া করে। পুরো কার্থেজ শহরটিকে তারা ধ্বংস করে দেয় কিন্তু এটিকে পুনরায় গঠন করে। ৬৯৮ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানদের আক্রমণের পূর্বভাগ পর্যন্ত কার্থেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর হিসেবে পরিগণিত হত।
২) সিউদাদ পার্দিদাঃ

ছবি সূত্রঃ গুগল
সিউদাদ পার্দিদার স্প্যানিশ মানে হচ্ছে “হারানো শহর”। কলাম্বিয়ার সিয়েরা নাভাডায় এটির অবস্থান। ধারণা করা হয় যে, খ্রিস্টাব্দ ৮০০ সালে এটিকে আবিষ্কার করা হয়। এই হারানো শহরটির চারপাশে সুউচ্চ সিঁড়ি এবং পাকা রাস্তা পাওয়া যায়। এই শহরে ‘তাইরোনা’ নামক একটি গ্রাম ছিল যার বাসিন্দাদের ‘তেয়ুনা’ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকত। স্প্যানিশরা এই অঞ্চল বিজয়ের আগেই কোন এক অজ্ঞাত কারণে গ্রামবাসীরা এই এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
৩) ট্রয়ঃ

ছবি সূত্রঃ গুগল
তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কিংবদন্তীর ট্রয় নগরীর অবস্থান ছিল। হোমারের বিখ্যাত কবিতা ‘ইলিয়াড’এ ট্রয় নগরীকে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মিথলজির ট্রোজান যুদ্ধগুলো এই নগরীতে হত বলে ধারণা করা হয়। প্রত্নতত্ত্বের নানা অসাধারণ নিদর্শন এই অঞ্চলে পাওয়া যায়।
৪) তিমগাদঃ

ছবি সূত্রঃ গুগল
আনুমানিক খ্রিস্টাব্দ ১০০ সালে রাজা ট্রাজানের মাধ্যমে আলজেরিয়ায় তিমগাদ নগরী স্থাপন করা হয়েছিল। যদিও মাত্র ১৫,০০০ মানুষের জন্য নগরের ডিজাইন করা হয়েছিল কিন্তু খুব শীঘ্রই মানুষ বেড়ে যাওয়ার কারণে নগরী তার সৌন্দর্য্য হারাতে শুরু করে।পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতকে এটি দস্যু ও বর্বরদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ইতিহাস থেকে এই নগরীর কথা মুছেই গিয়েছিল কিন্তু ১৮৮১ সালের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার ফলে এই নগরীটি আবার মানুষের গোচরে আসে।
তথ্যসূত্রঃ ট্যুরোপিয়া