বাংলাদেশের মোবাইল ফোন পেনিট্রেশন এখন ৭৫%, বিশ্বব্যাপী ৯৩.৫% । আমাদের মধ্যে অনেকেই এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করি। দিনে দিনে এটি আরও সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। স্মার্টফোনের নানা সেবা, নানা অ্যাপ, আমাদের জীবনে অনেক সুবিধা এনে দিচ্ছে। আমাদের ফোন এখন জীবনের মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেবার, বিবিধমুখী যোগাযোগের মাধ্যম, পথ দেখানোর সাথী এবং নানা কিছু।
তবে আমরা এসব নানা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার ভিড়ে নিজেকে উজাড় করে দেবার মধ্যে কিছু ব্যাপার ভুলে যাচ্ছি। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনটা খুব উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে আমাদের অজান্তেই। এসব স্মার্টফোন তাদের নানা সেবার জন্যে লোকেশন সেবা ব্যবহার করে যা আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা রেকর্ড করে।
অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম মোট স্মার্টফোন বাজারের প্রায় ৬২% কব্জা করে আছে, আইফোন ৩৬% এবং বাকি অন্যান্য। অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের জন্যে আপনার একটি গুগল আইডি থাকতে হবে। অনেক অ্যাপ বা সেবার জন্যে লোকেশন সেবা চালু করতে হয়। আপনি এটি বন্ধ করতে পারেন তবে অনেক সেবা যেমন গুগল ম্যাপ ন্যাভিগেশন, বা নাইক রানার চলবে না।
এখানে গুগল লাল ডটের মাধ্যমে প্রতি বিশ মিনিট পর পর অবস্থান রেকর্ড করে রাখছে। বলাবাহুল্য এর পুঙ্খানুপুঙ্খতা নির্ভর করে জিপিএস চালু থাকা আর নেটওয়ার্ক থাকা না থাকার উপর। চিত্রে বোঝা যাবে যে নেটওয়ার্ক না থাকায় একটি বড় অংশ রাস্তা বরাবর না দেখিয়ে লম্বা লাইন দেখান হয়েছে এবং কিছু ভুল অবস্থানও দেখানো আছে (জিপিএস না থাকলে কাছাকাছি অবস্থান দেখায়)। তবে আমি দেখেছি বাড়ির এক কোন থেকে আরেক কোনে যাবারও রেকর্ড থাকে।
আপনারা ফোনে যেই গুগল মেইল ব্যবহার করেন সেটা দিয়ে এই সাইটে লগইন করলেই জানতে পারবেন দিন ধরে আপনি কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন।
যারা আইফোন ব্যবহার করেন তারাও এই নজরদারি থেকে মুক্ত না। এই সাইটে দেখানো আছে অ্যাপল কিভাবে এবং কতটুকু ট্র্যাক করে।
যদিও তারা বলে যে এ তথ্য শুধু ব্যবহারকারীর আয়ত্তেই থাকবে এবং অন্যেরা জানবে না, এসব তথ্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনী চাইলে পেতে পারে। গুগল নাউ , সোয়ারম ইত্যাদি সেবা এতো তথ্য সংগ্রহ করে যে হয়ত অন্যের কাছে গেলে এর অপব্যবহার হতে পারে।
আমাদের তাই দরকার এ সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকা। আপনারা সহজেই ফোনের লোকেশন সেবা বন্ধ করতে পারবেন বা লোকেশন তথ্য মুছে ফেলতে পারবেন।
আমাদের জন্যে ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে তা দেখার বিষয়। টম ক্রুজের মাইনরিটি রিপোর্টে দেখানো হয়েছে যে রেটিনা স্ক্যান করে লোকের পরিচয় ও অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। সেদিন মনে হয় দুরে নয় যখন আমাদের লোকেশন সেবা চালু রাখতে বাধ্য করা হবে বা চালু না থাকলেও অজান্তেই কোথাও রেকর্ড হবে।